কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দিনাজপুরের কয়েক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার প্রধান তিনটি নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমির পাকা ধান ডুবে গেছে। এতে কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে। অনেক পুকুর ডুবে চাষির মাছ ভেসে গেছে। অপরদিকে বীরগঞ্জ উপজেলার ঢেপা সংযোগ নদীর পার্শ্ববর্তী কয়েক এলাকা ভাঙ্গনের আশংকা করেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, এক সপ্তাহের বৃষ্টির প্রভাবে বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর ইউপির নাফানগর, টেনা, ছেনিহারী, পুটকিবাড়ী, ইশানিয়া ইউপির খানপুর, জিনর, বাড়েয়া, বর্থ, দকচাই, মুশিদহাট ইউপির হরিশচন্দ্রপুর, জালগাঁও, কড়ই, আটগাও ইউপির বাজনিয়া, হাটমাধবপুর, আলমপুর, দৌলা, কাকদুয়ার, ছাতইল ইউপির কোদালকাটি, সুকদেবপুর, পরমেশ্বরপুর, কুকুরাডাঙ্গি, নাড়ইল, রনগাও ইউপির ধনঞ্জয়জুর, বাসুদেবপুর, গোবিন্দপুর, বনগাঁওসহ পৌর এলাকার কয়েক স্থানের কৃষকের ধান ও ভুট্টা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।
বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, বোচাগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাসহ ৬টি ইউপির ৮ হাজার ৮শ ৮০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। অর্জিত হয়েছে ৮ হাজার ৪শ ৭৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে পাকা ধান ৯০ হেক্টর ধান পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়া ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা ১৫শ ৫ হেষ্টর। অর্জিত হয়েছে ১৪শ ৭৫ হেষ্টর। পানিতে ডুবে গেছে ৩৫০ হেষ্টর।
আটগাঁও ইউপির কাকদুয়ার গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ২ বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। জানিনা ধানগুলো কাটতে পারবো কি পারবোনা এই নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।
একই ইউনিয়নের বরগাঁ গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, জমিতে এখনো ৩ বিঘা পাকা ধান কাঁটার বাকী আছে। পানি থাকার কারনে ধান কাঁটতে পারছিনা।
মুশিদহাট ইউপির পূর্ব বর্ষা গ্রামের হেমন্ত কুমার জানায়, আমার ৮ বিঘা জমির ধান বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। দ্রুত পানি না কমলে জমির ধান কাটা সম্ভব হবে না।
একই ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মাসুদ জানান, তার ৩ বিঘা জমির ধান এখনো পানিরে নিচে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে উঠতি ফসল ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এছাড়া অসংখ্য পুকুর পানিতে ডুবে যাওয়ায় পানির স্রোতে পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায় জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টি হওয়ায় উপজেলার প্রায় ৯০ হেক্টর জমির বোরো ধান ও ৩৫০ হেক্টর ভুট্টা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। তবে দুই-একদিনের মধ্যে পানি শুকিয়ে গেলে ধান, ভুট্টা কাটতে পারলে কৃষকের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।
অপরদিকে নদী ভাঙ্গনের কথা শুনে শুক্রবার বিকালে বীরগঞ্জ উপজেলার ঢেপা সংযোগ নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি।
তিনি বীরগঞ্জের নিজপাড়া ইউপির ছোট বোচাপুকুর এলাকায় যান এবং এলাকার লোকজদের খোজ খবর নেন। এসময় তিনি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল