৩০ নভেম্বর, ২০২০ ১১:৪৪

কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা বঞ্চিত রোগীরা

চাঁদপুর প্রতিনিধি

কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা বঞ্চিত রোগীরা

কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নষ্ট প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটে সাধারণ জনগণ স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত ও নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এতে করে প্রতিনিয়ত রোগীরা কাঙ্খিত সেবা ও হয়রানি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে রোগীদের নানাভাবে হয়রানি ও ভোগান্তি লক্ষ করা গেছে। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন চিকিৎসক পদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ ৯টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য ৯টি পদের মধ্যে কনসালট্যান্ট পদই ৮টি রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি কনসালট্যান্ট পদটিও দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য রয়েছে। এতে করে নারী রোগীরা কাঙ্খিত জটিল চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এছাড়া সার্জিক্যাল কনসালট্যান্ট না থাকায় অপারেশন থিয়েটারটি দীর্ঘদিন বন্ধ থেকে যন্ত্রপাতি বিনষ্ট হয়ে গেছে।

১০ বছর যাবৎ অকেজো এক্স-রে মেশিন। সেই সাথে এক্স-রে রেডিওলজিস্ট ও টেকনিশিয়ান পদটিও শূন্য। এতে করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় রোগীদের হাতে স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বলেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে স্লিপ নিয়ে টানাটানি শুরু করে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকের দালালরা। প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে সাধারণ রোগীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

সচেতন মহলের দাবি, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ার কারণেই উপজেলার যত্রতত্র বেশকিছু প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে রোগীদের সেবার মান নিয়ে প্রায় অভিযোগ উঠছে।

এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৪৫টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-স্বাস্থ্য সহকারী ৩০টি ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ৩টি পদ এবং চতুর্থ শ্রেণির ১১টি পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া দারোয়ানের ২টি পদই রয়েছে শূন্য।

চারটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে ৩টি উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও ফার্মাসিস্টের ৪টি পদই শূন্য। ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ডাক্তার ও ভিজিটরদের বসার মতো নেই কোনো চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সালাহউদ্দিন মাহমুদ বলেন, চিকিৎসক সংকট ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে আছে। এসব সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন সাখাওয়াত উল্যাহ জানান, কনসালট্যান্ট চিকিৎসক সংকটের তালিকা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ২০১২ সালের পর থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। অ্যানেসথেসিস্ট, গাইনি ও সার্জারি কনসালট্যান্ট চিকিৎসকের পদগুলো পূরণ হলে এই কমপ্লেক্সে সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। তবে এক্স-রে মেশিনটি খুব সহসাই পাওয়া গেলেও এক্স-রে রেডিওলজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নেই। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও আমরা জনগণকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর