৪ আগস্ট, ২০২১ ২১:৩৯

বিধিনিষেধের মধ্যেও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড়

মাদারীপুর প্রতিনিধি

বিধিনিষেধের মধ্যেও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড়

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত চলমান বিধিনিষেধের মধ্যেও ঢাকামুখী হচ্ছেন যাত্রীরা। গত কয়েকদিনের মত বুধবার (৪ আগস্ট) ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় রয়েছ মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে। লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ভিড় ঠেলে পার হচ্ছেন ফেরিতে। 

এদিকে, গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আসতে প্রতিটি ফেরির নির্ধারিত সময়ের পরিবর্তে প্রায় দ্বিগুন সময় লাগছে। একই সঙ্গে ফেরিগুলোয় নেওয়া হচ্ছে ধারণ ক্ষ্মতার চেয়ে অর্ধেক যাত্রী ও যানবাহন। ফলে ফেরি পারাপারে যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের দুর্ভোগে পরতে হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি ঘাট সূত্র জানায়, গত রবিবার থেকে গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খোলার ঘোষণায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের ভিড় বাড়তে শুরু হয় বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। বেশির ভাগ যাত্রীরা পোশাকশ্রমিক হওয়ায় তাদের ফেরিতে পরিবহন করা হচ্ছে। তবে গত তিন দিনের তুলনায় বুধবার যাত্রীর চাপ কিছুটা কমেছে। প্রতিটি ফেরিতে যাত্রীর সঙ্গে সীমিত সংখ্যক যানবাহন পার হতে দেওয়া হচ্ছে। তবে পদ্মায় তীব্র স্রোত থাকার কারণে নৌপথে সব ধরণের দুর্ঘটনা এড়াতে সীমিত করা হয়েছে ফেরি চলাচল। এই নৌপথে ১৮টি ফেরি চালু থাকলেও তীব্র স্রোতের কারণে ৬টি ডাম্প ফেরিসহ ৮টি ফেরি ঘাটের বিভিন্ন অংশে নোঙর করে রাখা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ কম। তবে একদম কম তা নয়। যাত্রীরা আসছে। ফেরিতে পার হয়ে যাচ্ছে। কোন দুর্ভোগে তাদের পরতে হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে আমরা এখন ১০টি ফেরি চালাতে পারছি। ৮টি ফেরি বন্ধ রয়েছে। এই কারণে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক আটকা থাকলে আমরা ট্রাকগুলো পর্যায়ক্রমে পার করে দিচ্ছি। তবে ঘাটে অ্যাম্বুরেন্স, লাশবাহী গাড়ি, কাঁচামালের গাড়িসহ জরুরি প্রয়োজনে আসা গাড়িগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমরা পার করে করছি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার সকাল থেকে বাংলাবাজার ঘাটে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় চার শতাধিক গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে। আটকা পড়া এই যানবাহনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পণ্যবাহী ট্রাক রয়েছে।

ঘাটে আটকা পণ্যবাহী ট্রাকের চালক কবির হোসেন বলেন, ঘাটে ফেরিতে যাত্রী আর ছোট গাড়ি লোড নেয়। ট্রাক কখনো তোলে কখনো তোলে না। প্রতিটি রানিং ফেরিতে আমাদের ৩টি করে ট্রাক লোড নিলে আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হয় না।

খুলনা থেকে আসা পণ্যবাহী আরেকটি ট্রাকের চালক সরোয়ার কাজী বলেন, ফেরিঘাটে আমাদের দুর্ভোগ দিন দিন শুধু বাড়ছে। এসব দেখার কেউ নাই। ঘাটে আমরা অনেকেই তিন থেকে চারদিন ধরে আটকা আছি। ট্রাকেই খাইতে হয়, ঘুমাইতে হয়। দুর্ভোগ কি সেটা আমারা হারে হারে টের পাই।

বরিশাল থেকে আসা ঢাকামুখী যাত্রী ইফতেখার মাহামুদ বলেন, জরুরি কাজে ঢাকায় যাচ্ছি। সড়ক পথে ছোট গাড়ির আসতে পুলিশের বাঁধার মুখে না পড়লেও কয়েকগুন টাকা ভাড়া চলে গেছে। ঘাটে এসে কিছুক্ষণ অপেক্ষায় থাকার পরেই ফেরিতে উঠতে পারছি।

বাংলাবাজার ঘাটের দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের পরির্দশক জামাল উদ্দিন বলেন, লঞ্চ না চলায় যাত্রীদের চাপ কিছুটা বাড়তি ফেরিতে। তবে উপচে পড়া ভিড় নেই। যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহনগুলোকে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফেরিতে উঠিয়ে দিচ্ছি। তাই কিছু পণ্যবাহী ট্রাক ঘাটে আটকা পড়ছে। এ ছাড়াও নিয়মিত ছোট গাড়ির যেমন চাপ থাকে তেমনই আছে।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর