রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার পাল তুলতে কেন্দ্রীয় ৩ নেতা রংপুরে অবস্থান করছেন। নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিতে তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সাথে নিয়ে তারা নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন এবার রংপুরবাসি মেয়র হিসেবে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচক বিশ্লেষক কারও কারও মতে নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিদ্রোহী প্রার্থী ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নৌকা মার্কা প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, সাখওয়াত হোসেন শফিক, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত কুমার নন্দি শনিবার থেকে রংপুরে অবস্থান করছেন। তারা আরও ৩/৪ থাকবেন। শনিবার রাতে তারা নগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা মার্কার পক্ষে প্রচারণা চালান।
প্রচারণা কালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের মতো রংপুরেও উন্নয়ন করেছেন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় রংপুর বিভাগ, সিটি করপোরেশন, বিশ্ববিদ্যালয়, ছয় লেন সড়ক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সবখাতেই উন্নয়ন করেছেন। শুধু রংপুর সিটি করপোরেশনে নৌকার প্রতিনিধি না থাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। এবার নৌকা মার্কা বিজয়ী হলে প্রত্যাশিত উন্নয়ন সম্ভব হবে। আশা করি জনগণ এবার নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করবেন। রসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশায় আওয়ামী লীগের ৬/৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশি দীর্ঘদিন থেকে মাঠে প্রচারণা চালিয়েছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশিরা বিভিন্ন সভা সমাবেশ করে জনগণের কাছে নিজেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছেন। এসব নেতাদের সকলেরই আশা ছিল তাদের মধ্যে কেউ মনোনয়ন পাবেন। কিন্তু দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা মার্কার প্রার্থী হিসেবে অ্যাড হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়াকে মনোনয়ন দেন। ফলে মনোনয়ন বঞ্চিতদের অনেকেরই মাঝে গাছাড়াভাব লক্ষ্য করা যায়। এসব নেতাদের মনবল চাঙ্গা ও কর্মীদের মাঠ পর্যায়ে কাজে নামানোর অনুপ্রেরণা দিতেই কেন্দ্রীয় নেতারা রংপুরে এসেছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন হাতি মার্কা নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। বিদ্রোহী এই প্রার্থীকে নিয়েও দলের মধ্যে অস্বস্তি রয়েছে। আওযামী লীগের একটি পক্ষ মিলনকে নিরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন ।
এদিকে পোস্টার ছেঁড়া ও অপসারণের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন। তিনি রবিবার দুপুরে তার নির্বাচনি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে লাঙল প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কৃষিভিত্তিক আধুনিক নগরী গড়তে পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে হাতি প্রতিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তাতে ব্যাপক সাড়া দিচ্ছে নগরবাসী। কয়েকদিন ধরে রাতের বেলা তার পোস্টার এবং পোস্টারের মালার সুতলি কেটে দিচ্ছে । এতে প্রায় ১০ হাজার পোস্টার নষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি রংপুর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে জাতীয় পার্টি মনোনিত মেয়র প্রার্থী মোস্তাাফিজার রহমান মোস্তফা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল জানান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা কয়েকদিন রংপুরে থাকবেন। তারা নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার লক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাবেন। নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার বিষয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জিবিত করবেন এবং জনগণের কাছে সরকারের উন্নযন কর্মকান্ড তুলে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট চাইবেন।
এবার মেয়র পদে ৯ জন এবং কাউন্সিল ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর সহমোট ২৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৭ ডিসেম্বর ২২৯ কেন্দ্রে ইভিএমর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ