নাটোর শহরতলীর দত্তপাড়া হাটের জায়গা অবৈধ দখলকারী ১০ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান দখলদাররা। এ সময় অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রওশন আলম তাদের জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অবৈধ দখলদাররা হলেন সদর উপজেলার গোয়ালডাঙ্গার মোতালেব হোসেন, জয়নাল আলী, নূর আলম, বড়হরিশপুর এলাকার হোসেন আলী, আকরাম হোসেন, মোকরামপুর এলাকার শরৎ কুমার, দত্তপাড়া গ্রামের বিকচাঁন আলী, মুক্তা হোসেন, অরুণ মিয়া, আবুল কাশেম।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নাটোর শহরতলীর দত্তপাড়ায় সরকারি ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত হাটের নির্ধারিত ১২ শতক জায়গা দীর্ঘদিন ধরেই দখল নিয়ে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে প্রভাবশালীরা। প্রভাবশালীরা শুধু বাজার দখল করেই ক্ষান্ত হয়নি, সরকারি জায়গা লাখ লাখ টাকায় বেচাকেনাও করছে তারা। এতে বসার জায়গা না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মহাসড়কের পাশেই নিজেদের উৎপাদিত কাঁচামাল বিক্রি করেন কৃষকরা। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তা দেখে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান স্বপ্রণোদিত হয়ে অবৈধ দখলদারিত্বের বিষয়টি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেবার নির্দেশ দেন। পরে তদন্ত করে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এর আগে জেলা প্রশাসন থেকেও অবৈধ দখলদারদের স্থায়ী স্থাপনা সরিয়ে নিতে উচ্ছেদ নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু অবৈধ দখলদাররা তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়নি।
স্থানীয় কৃষক রেজাউল করিম গাজী বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার কর্মযজ্ঞ চলে দত্তপাড়া বাজারে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দখলকৃত স্থানে যে যার মতো গড়ে তুলেছে স্থায়ী স্থাপনা। কেউ কেউ হাটের জায়গায় স্থায়ী অবকাঠামো করে অযথাই ফেলে রেখেছে। দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় চলে দখলদারিত্ব কেনাবেচা। কয়েক দিন আগেও আব্দুর রাজ্জাক নামে একজন দোকানদার ২ লাখ টাকায় আরেকজনের দখলকৃত জায়গা কিনেছেন।
কাঁচামাল ব্যবসায়ী সেন্টু হোসেন জানান, বাজারের জায়গা হোসেন আলী, মোতালেব, শরৎ ও নূর আলম পাকা দোকান করে দখল করে রেখেছেন। এক-একজনের একাধিক পাকা দোকানঘর রয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকজন জায়গা দখল করে অযথাই পরিত্যক্ত করে ফেলে রেখেছেন। তারা নিজেও ব্যবসা করেন না, অন্যদেরও বসতে দেন না। ফলে হাটে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের সীমাহিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
দত্তপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলাম। এরপর প্রশাসন থেকে দখলকৃত স্থাপনা চিহ্নিত করে লাল দাগ দিয়েছে। এর কিছুদিন পর সব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ নোটিশও দিয়েছে প্রশাসন। উচ্ছেদ নোটিশ পাবার পরও কোনও তোয়াক্কা করেনি অবৈধ দখলদাররা। তারা বাজার কিমিটিকে নানা ভাবে হেনস্থারও চেষ্টা করে। পরবর্তীতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান স্বপ্রণোদিত হয়ে অবৈধ দখলদারিত্বের বিষয়টি পিবিআইকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেবার নির্দেশ দেন। এখন আমাদের দাবি দ্রুত দখলদারদের উচ্ছেদ করা হোক।
বিডি প্রতিদিন/এএ