নানান বিতর্ক মাথায় নিয়ে সরতে হয়েছে চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানকে। তার বিদায়ের পর মাঠ প্রশাসনসহ পুরো প্রশাসনের কর্মকর্তারা কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষা করছেন, কে আসছেন নতুন জনপ্রশাসন সচিব হিসেবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এ গুরুত্বপূর্ণ পদে যিনি আসবেন নির্বাচনের মাঠ সাজানোর দায়িত্বও তাকে পালন করতে হবে। সে কারণে এ পদে আসতে পারেন এমন কর্মকর্তাদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে প্রশাসনের সর্বস্তরে।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন হবে। তার আগে দেশের প্রশাসন নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় থেকে সচিব সরানোতে সবাই রীতিমতো অবাক হয়েছেন। মাঠ প্রশাসনে কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এডিসি, ইউএনও পদায়ন করা হয় এ মন্ত্রণালয় থেকেই। জাতীয় নির্বাচনের আগে মাঠ প্রশাসন ইতোমধ্যে একটু একটু করে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে কয়েক জেলায় ডিসি রদবদল করা হয়েছে, সামনে আরও হবে। এ অবস্থায় জনপ্রশাসন সচিব রদবদলে নতুন করে হিসাবনিকাশ শুরু হয়েছে। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমানকে সরিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) করা হয়েছে। অনিয়মসহ নানান বিতর্কে জড়ানো এ কর্মকর্তা বদলির পর থেকে অনেকেই জনপ্রশাসনের এপিডি উইংয়ে খোঁজ রাখছেন কে আসতে পারেন এ পদে। বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সচিবের রুটিন দায়িত্ব¡ দেওয়া হয়েছে ওই মন্ত্রণালয়ের ১৮ ব্যাচের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু শাহীন মো. আসাদুজ্জামানকে। নতুন সচিব নিয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. এরফানুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখনো এ নিয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। সচিবালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, জনপ্রশাসন সচিব নিয়োগ ১০ দিনের আগে হবে না। কারণ এ মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র আছেন। তিনি জাতিসংঘের অধিবেশন ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে ফিরবেন আগামী ২ অক্টোবর। ৫ অক্টোবরের পর এ মন্ত্রণালয় নতুন সচিব পাবে বলছে সূত্রগুলো।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে আবার কাউকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে কি না সেটি নিয়েও রয়েছে আলোচনা। তবে চুক্তিতে এলে কে আসবেন সেটি বলছেন না কেউ। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সালেহ আহমেদ নতুন জনপ্রশাসন সচিব হতে পারেন। তিনি ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর সিনিয়র সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। এ ছাড়াও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এবং চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদের নাম রয়েছে আলোচনায়। এর বাইরে ১১ ব্যাচের দুই কর্মকর্তা খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলমের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা দুজনই জনপ্রশাসনে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলামের কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে তুলনামূলক সিনিয়র এবং প্রশাসনের খুঁটিনাটি জানাশোনা এমন সচিব খোঁজা হচ্ছে বলে জানায় সূত্রগুলো।