২৫ মে, ২০২৪ ১৭:০৯

বাবার মতো ছেলেকেও পিটিয়ে হত্যা শার্শায়: আটক তিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

বাবার মতো ছেলেকেও পিটিয়ে হত্যা শার্শায়: আটক তিন

যশোরের শার্শা উপজেলার কন্যাদাহ গ্রামে সাইফুল ইসলাম মুকুল (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৭ বছর আগে তার পিতা আব্দুল আজিজ গাইনকেও একইভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। দুটি হত্যাকাণ্ডের সাথেই একই পরিবারের লোকজন জড়িত বলে জানা গেছে। পুলিশ স্থানীয় ইউপি মেম্বরসহ তিনজনকে আটক করেছে। 

নিহত সাইফুলের নামাজে জানাজায় শনিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ দলটির জেলা, উপজেলা শাখার কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। 

স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ১০টার দিকে কন্যাদাহ গ্রামে ১০/১২ জন মিলে সাইফুল ইসলাম মুকুল ও তার ভাই শরিফুল ইসলাম বকুলকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু মুকুলের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান মুকুল। এ ব্যাপারে নিহতের মা ছায়রা বেগম বাদী হয়ে শার্শা থানায় একটি মামলা করেন। মামলার মূল অভিযুক্ত হাসান মেম্বার, তাজউদ্দিন ও কামরুজ্জামানকে শুক্রবার দুুপুরে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শার্শা থানার ওসি শেখ মো. মনিরুজ্জামান। 

নিহতের স্বজনরা জানান, উলাসী ইউপি’র চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আইনাল হোসেনের ভাই আইয়ুব হোসেন ১৯৯৭ সালে খুন হন। ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কন্যাদাহ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল আজিজ গাইনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আইনাল হোসেনের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই ঘটনার ২৭ বছর পর আবদুল আজিজের ছেলে মুকুলকেও পিটিয়ে হত্যা করা হলো। 

স্থানীয়রা বলছেন, মুকুলের ভাগ্নে নয়নের সাথে ইউপি মেম্বার হাসানুজ্জামানের পরিবারের এক মেয়ের প্রেম হয়। এ বিষয়ে হাসানুজ্জামান সালিস ডাকলে সেখানে নয়ন হাজির না হয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এ ঘটনায় বুধবার হাসানুজ্জামান তার সহযোগীদের নিয়ে নয়নের মামা শরিফুল ইসলামকে ধরে নিয়ে নিজের গরুর খামারে আটকে রাখেন। এসময় তাকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। খবর পেয়ে শরিফুলের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম মুকুল তাকে উদ্ধার করতে সেখানে গেলে হাসানুজ্জামান বিদেশি টর্চলাইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। এসময় হাসানুজ্জামানের সহযোগীরাও তাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন। মুকুল এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে হাসানুজ্জামান ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যান। পরে দুই ভাইকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুকুলকে সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়। 

এদিকে, শনিবার মুকুলের লাশ তার গ্রাম কন্যাদহে পৌঁছালে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুপুরে জানাজার নামাজে অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপির হাজারো নেতা-কর্মী। এসময় বিএনপি নেতারা বলেন, ওই এলাকা থেকে বিএনপির নাম-নিশানা মুছে দেওয়ার জন্যই পরিকল্পিতভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে। পিতার পর ছেলেকেও হত্যা করা হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার এখন না হলেও একদিন হবেই। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর