নরসিংদীর মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুবুল হাসানকে খুন করে কাতার চলে যায় হত্যাকাণ্ডের মাষ্টারমাইন্ড। তবে কাতার গিয়েও রক্ষা হলো না তার। কাতার থেকে ফিরিয়ে এনে ২ নম্বর আসামি রাসেল মাহমুদকে (৪৫) গ্রেফতার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো: মোহমশাফিজুর রহমান। এর আগে শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর কাতার এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় তাকে বাংলাদেশ ফেরত এনে গ্রেফতার করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে অপর অভিযুক্ত মেহেরপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
গ্রেফতাকৃত রাসেল মাহমুদ (৪৫) মাধবদী পৌলানপুর এলাকার হাবিবুর রহমান এর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অন্যান্য গ্রেফতারকৃতরা হলো মাধবদী পৌলানপুর এলাকার মৃত কদম আলী’র ছেলে মো. হাবিবুর রহমান (৬৫) তার ছেলে মো. হিমেল মিয়া (৪৩) অপর ছেলে জুয়েল মিয়া (৩৯), অপর ছেলে নবেল মিয়া (২৮), টাঙ্গাইল গোপালপুর খানপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলী’র ছেলে মো. রাব্বী (১৯), কুরিগ্রাম জেলার আব্দুর রহিমের ছেলে মো. মিঠু (৩৫) ও মাধবদী কবিরাজপুর এলাকার জমির উদ্দিনের ছেলে মো. লিপু মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ইউপি চেয়ারম্যান হত্যাকান্ডের মাষ্টার মাইন্ড রাসেল মাহমুদ হত্যাকান্ডের একদিন পর ২৯ মে কাতার এয়ারলাইন্স যোগে কাতার হয়ে দক্ষিন আফ্রিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। খবর পেয়ে মাধবদী থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের যৌথ টিম শাহজালাল আস্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। জেলা পুলিশের যৌথ টিম বিমান বন্দরে যখন পৌঁছায় তখন মাষ্টারমাইন্ড রাসেলকে বহনকারী কাতার এয়ারলাইন্স এর বিমানটি রানওয়েতে অবস্থান করছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরবর্তীতে জেলা পুলিশ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাতার ইমিগ্রেশন পুলিশের সহয়তা চাওয়া হয়। পরে অভিযুক্ত রাসেল মাহমুদ কাতার ইমিগ্রেশনে পৌঁছালে সেখানকার পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তাকে ফিরতি ফ্লাইটে বাংলাদেশে প্রেরণ করে। মাষ্টারমাইন্ড রাসেল মাহমুদ ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছালে ঢাকা ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো জানায়, হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে মঙ্গলবার রাতে নিজ কার্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুবুল হাসানকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে আসামিরা। হত্যার দুইদিন পর নিহতের ভাই ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে মাধবদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এলাকার আধিপত্ব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্ত’র সাথে নিহত সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হাসানের সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল