টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ৬ মাস আগে প্রতিবেশি নানা কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ফজলুল হক (৫৫) নামে এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে বিচার চেয়ে আইনি সহায়তা চেয়েছে ওই ছাত্রী ও তার পরিবার।
এদিকে ভুক্তভোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ফজলুল হকের পক্ষে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এ ঘটনাটি সাত লাখ টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়নের সাত্তারকান্দি (চরপাড়া) গ্রামে। অভিযুক্ত ফজুলল হক একই গ্রামের মৃত জহুরুল হকের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। এ ঘটনা জানাজানি হলে গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী জানায়, অভিযুক্ত ফজুলল হক আমার সম্পর্কে প্রতিবেশী নানা। তিনি বিভিন্ন সময়ে চিপস, চকলেট খাইয়ে ও টাকার লোভ দেখিয়ে নানা প্রলোভনে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এঘটনাটি পরিবার বা অন্য কাউকে না বলার জন্য আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ফজলুল হক। ভয়ে এ নিয়ে কাউকে কিছু জানায়নি। অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি টের পেয়ে অভিযুক্ত ফজলুল হক আমাকে গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বর্তমানে আমি ৬ মাসের অন্তঃসত্বা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা না করার হুমকিতে আমি ও আমার বাবা মা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এঘটনায় উপযুক্ত বিচার চাই।
কিশোরীর বাবা বলেন, আমার মেয়েটি পাশের একটি হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে, একদম শিশু বাচ্চা। ফজলুল হক আমার ভাইয়ের সম্পর্কে উকিল শ্বশুর। সেই সুবাদে আমার মেয়ের সম্পর্কে নানা হওয়ায় আমাদের বাড়িতে তার যাতায়াত। আমি কাজকর্মে বাড়ীর বাইরে যাই। ওর মাও বাড়ির বাইরে কাজে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে ফজলুল হক ফজু আমার মেয়ের যে ক্ষতি করেছে, তার উপযুক্ত বিচার চাই।
ওই কিশোরীর দাদা রমজান আলী ও দাদী আজিরন বেগমসহ এলাকাবাসীর ভাষ্য, কিশোরী মেয়েটা ৬ মাসের গর্ভবতী। ফজলুল হক পালিয়ে বেড়ালেও স্থানীয় প্রভাবশালী ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ স্বপন ও স্থানীয় মাতাব্বর তছলিম উদ্দিন (বড় গ্যাদা), খাইরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি তার পক্ষে কলকাঠি নাড়ছেন। তারা মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে সময় নষ্ট করছেন। সেই সাথে ৭ লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য পায়তারা করছে। এ কারণে মামলা করতে যেতে দিচ্ছে না তারা। ভয়ভীতির মধ্যে আছেন। প্রশাসনের এরকম ন্যাক্কারজক ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করেন তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিলন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফজলুল হকের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার। যদুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এমন কোনো তথ্য জানা নেই ধনবাড়ী থানার ওসি মো: হাবিবুর রহমানের। তিনি বলেন, ‘এটা আমার জানার বিষয়ও না। ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল