ফরিদপুরের বােয়ালমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মােশাররফ হােসেন দােয়াত কলম মার্কা, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রাসেল রেজা মােটরসাইকেল মার্কা, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক চতুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু ঘােড়া মার্কা, জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাে. লিটন মৃধা আনারস মার্কা ও মাে. হিরু মুন্সী কাপ প্রিচ মার্কা নিয়ে জাের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, সবচেয় বেশি বার্ষিক আয় সৈয়দ রাসেল রেজার। ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫৭৬ টাকা। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বার্ষিক ভাতার পরিমান ৩ লাখ ২৪ হাজার। তার মােট আয় ৯১ লাখ ১২ হাজার ৫৭৬ টাকা। সব চেয়ে কম আয় মাে. মনিরুজ্জামান লিটন মৃধা ও শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর। ব্যবসা থেকে মোঃ মনিরুজ্জামান লিটন মৃধার বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর বাৎসরিক আয় কৃষিখাত থেকে ২৫ হাজার, ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৩৫ হাজার, মােট ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এম এম মােশাররফ হােসেনের বার্ষিক আয় ব্যবসা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ভাতা থেকে আয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। মােট ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মাে. হিরু মুন্সীর বার্ষিক আয় ব্যবসা থেকে ২২ লাখ ৮৮ হাজার ৯৮৬ এবং অন্যান্য খাত থেকে ৩৬ হাজার। মােট আয় ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৮৬ টাকা।
শিক্ষাগত যােগ্যতা, সৈয়দ রাসেল রেজা ও মোঃ হিরু মুন্সী বিএ পাশ, এম এম মােশাররফ হােসেন ও শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু এইচএসসি এবং মাে. মনিরুজ্জামান লিটন মৃধা এসএসসি পাশ। হিরু মুন্সীর বিরুদ্ধে করাত কল আইনের একটি মামলা বিচারাধীন অপর একটি মামলা তদন্তাধীন। শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর একটি মামলা সিআইডি তদন্ত করছে। অপর তিনজনের নামে কােন মামলা নেই।
এম এম মােশাররফ হােসেনের সম্পদের পরিমাণ নগদ টাকা ব্যবসার পুঁজিসহ ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫৬৯ টাকা। উপহার হিসেবে পাওয়া ১০ তােলা স্বর্ণের মূল্য ২০ হাজার টাকা। উপহার হিসেবে পাওয়া খাট, সােফা, আলমারীর মূল্য ১০ হাজার টাকা। উপহার হিসেব প্রাপ্ত টিভি, ফ্রিজ, মােবাইল ইত্যাদির মূল্য অজানা। পত্রিক সূত্রে পাওয়া ২৬০ দশমিক ২৫ শতাংশ জমির মূল্য এক কাটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বােয়ালমারী বাজারে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের অর্ধেকের ব্যয় ৩৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। কােন দায় না থাকলেও সােনালী ব্যাংক বােয়ালমারী শাখায় ১১ হাজার ৭৬৯ টাকার একটি একক ঋণ রয়েছে। শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর সম্পদের পরিমাণ, নগদ ৯০ হাজার টাকা। উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ৬ ভরি স্বর্ণের মূল্য অজানা। উপহার হিসেবে পাওয়া টিভি, ফ্রিজ, ওভেন, কম্পিউটার, মােবাইল, খাট, শােকেচ, আলমারী, ওয়ারড্রফের মূল্য অজানা। মাে. মনিরুজ্জামান মৃধা লিটনের সম্পদের পরিমাণ, নগদ ২ লাখ ও স্ত্রীর ৫ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমার পরিমাণ ৩ হাজার টাকা। একটি মাইক্রােবাস যার মূল্য ৩৩ লাখ টাকা। উপহার হিসেবে পাওয়া স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণের মূল্য অজানা। টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান ইত্যাদির মূল্য ১ লাখ টাকা। খাট, সােফা, আলমারী, চেয়ার টেবিলের মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কৃষি জমির পরিমাণ ১ দশমিক ২০ একর। দায় না থাকলেও পূবালী ব্যাংক ফরিদপুর শাখায় ঋণের পরিমাণ ১৫ লাখ টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংক বােয়ালমারী শাখায় ৫০ হাজার টাকার ঋণ রয়েছে। তবে খেলাপী ঋণ নেই। মাে. হিরু মুন্সীর সম্পদের পরিমাণ, নগদ ১১ হাজার ৪৭৯ টাকা, একটি প্রাইভেট কার যার মূল্য ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। উপহার হিসেবে পাওয়া স্ত্রীর ২৫ ভরি স্বর্ণের মূল্য অজানা। টিভি, ফ্রিজ, এসি, মােবাইলের মূল্য ৬০ হাজার টাকা। খাট, সােফা, আলমারী, ওয়ারড্রফ, শােকেচের মূল্য ৬৫ হাজার ৩৪৪ টাকা। কৃষি জমি নিজের ৩০০ শতক, স্ত্রীর ৩১৩ শতক। অকৃষি জমি নিজের ১০০ শতক, স্ত্রীর ১২ শতক। একটি ফ্লাট যার মূল্য ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ৮০ টাকা। ইস্টার্ন ব্যাংকের নিকট তার দায় রয়েছে ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৯৬ টাকা। সৈয়দ রাসেল রেজার সম্পদের পরিমাণ, ব্যবসার পুঁজিসহ নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত ৩ কােটি ৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৩১ টাকা। এছাড়া পূবালী ব্যাংকের একটি হিসাবে জমা আছে ৭ হাজার ৯৯৬ টাকা। উপহার হিসেবে পাওয়া ৩৫ তােলা স্বর্ণের মূল্য অজানা। টিভি, ফ্রিজ, মােবাইলের মূল্য ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। খাট, সােফা, আলমারী ইত্যাদির মূল্য ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সৈযদ রাসেল রেজার কােন দায়-দেনা বা ব্যাংক ঋণ নেই।
আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠেয় চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলাটিতে ৭৮টি কেন্দ্রে ৫৯০টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ১৮৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬ হাজার ৫৩৪ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ৬৫৩ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ১ জন।
বিডি প্রতিদিন/এএ
