কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়-মগনামা ঘাট পারাপারের নৈরাজ্য ও অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার কুতুবদিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে কুতুবদিয়া উপজেলার লামার বাজার ফুলতলায় এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপে প্রায় দু’লাখ মানুষের বসতি এ যাতায়াতের জন্য ডেনিস বোট এবং স্পিড বোট দিয়ে পাড়ি দিতে হয়। সেক্ষেত্রে রয়েছে পাঁচটি জেটিঘাট। তৎমধ্যে খুবই ব্যস্থতম বড়ঘোপ স্টিমার ঘাট ও দরবার জেটিঘাট। দৈনিক এ দু’টি জেটিঘাট দিয়ে পারাপার করতে হয় হাজারো মানুষের।
কুতুবদিয়া দরবার ঘাট ও বড়ঘোপ জেটিঘাট থেকে মগনামা জেটিঘাটের দূরত্ব আনুমানিক তিন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার। জোয়ার-ভাটার পালাক্রমে ডেনিশ বোটে এই পথ পাড়ি দিতে হয় ৩০-৪০ মিনিট আর স্পিডবোটে সময় লাগে মাত্র ৭-৮ মিনিট। গত বছর দু’এক আগেও ডেনিশ বোটে মাথাপিছু ভাড়া নেয়া হতো ২০ টাকা ও স্পিডবোটে ৭০ টাকা। তবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে গত কয়েক বছর ধরে যাত্রীদের জিম্মি করে ২০-৩০ টাকার স্থলে ৪০ ও ১০০ টাকার স্থলে ১২০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে।
এ সময় বক্তারা আরও বলেন, স্থানীয় জেলা প্রশাসনের অধীনে প্রতি বছর দ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ এ ঘাটগুলো কোটি টাকার বিনিময়ে ইজারা দেয়া হয়। ইজারাদারের বাৎসরিক লাখ লাখ টাকা আয়ের পাশাপাশি সরকারি রাজস্বখাতেও জমা হয় বিপুল অঙ্কের টাকা। অথচ এ দু’টি জেটি ঘাট পরিচালনায় রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতি। ইজারাদারের অব্যবস্থাপনায় ঘাট পারাপারের কোনো নিয়ম-নীতি নাই। অতিরিক্ত ভাড়া তো আদায় করে তার উপর যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণও করে তারা। জেটিঘাটে সন্ধ্যার পর হলেই নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার। জেটির বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত স্ট্রিট লাইট গুলো অচল হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
সরকারিভাবে জেটিঘাটে বিভিন্ন মালামাল ও যাত্রীদের ভাড়া নির্ধারিত তালিকা ও বিল বোর্ড টাঙ্গানোর নির্দেশনা দিতে হবে। যাত্রী ও বোট চালকদের সাথে প্রতিনিয়ত ভালো ব্যবহার করতে হবে। কুতুবদিয়া মগনামা নৌ-রুটে প্রতিদিন কুতুবদিয়ার অগণিত মানুষ যাতায়াত করে। সেটাকে কেন্দ্র করে ঘাটের ইজারাদার কিছু কতিত ব্যক্তির সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধ হয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন ধরে ওই সিন্ডিকেটের কবলে জিম্মি দ্বীপের প্রায় দু’লাখ মানুষ। ঘাট পারাপারে এমন নৈরাজ্যকে প্রতিহত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে অভিযোগ হয়েছে বহুবার। এ নিয়ে স্থানীয় উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ আলোচনাও কম হয়নি। কিন্তু যথাযথ কোনো সমাধান কিংবা এর প্রতিকার পায়নি বলেও জানান বক্তারা। অনতি বিলম্বে এই পারাপারের সমাধান না করলে আবারও কর্মসূচির ঘোষণা দেন কুতুবদিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
বিডি প্রতিদিন/এএ