ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কুলিক নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের গর্তে পড়ে শিশু নিহতের ঘটনায় ইউএনও কে দায়ী করে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। ঘটনাটির পর এলাকায় শোকের মাতমের পাশপাশি বিরাজ করছে উত্তেজনা।
আজ বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে উত্তরগাঁও এলাকাবাসীর ব্যানারে এই মনববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব-ঠিকাদার মতিউর রহমান ও ইউএনও শাফিউল মাজলুবিন রহমানের অবহেলাজনিত অপরাধের বিচার দাবি করেন বক্তরা।
তারা বলেন, ইউএনও যদি আইনভঙ্গ করে, তাহলে রক্ষা করবে কে? যেখানে ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু তোলার অপরাধে বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। কিন্তু ইউএনও উল্টো ঠিকাদারের ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে রামরায় পুকুরে নিয়ে এসেছেন। আর নদীর সেই গর্তে উত্তরগাঁও গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে শায়ান আহাম্মদ(১০) নদীতে খেলাধুলা করতে গিয়ে ড্রেজারের বালু তোলা গর্তে পড়ে পানির নিচে তলিয়ে যায়। পরে ড্রেজার মেশিনের লোকজন তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। আজকে শায়ান চলে গেছে কাল আমাদের আর কোন ছেলে যাবেনা তার কোন ভরসা নেই। আমরা চাই এটার সুষ্ঠু সমাধান। যদি এটার কোন সমাধান না হয় দোষিদের কোন বিচার না হয় তাহলে এরপর আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।
নিহতের মা বিলকিস বেগম জানান, আমার ছেলের বিনিময়ে আমি কিছু চাইনা, যাদের অবহেলায় আমার সন্তানটি মারা গেছে তাদের বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিউল মাজলুবিন রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমি বালু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে কিনে নিয়েছি। এছাড়া আমার নির্দেশে কেউ ড্রেজার বসায়নি। যেখানে পাানি উন্নয়ন বোর্ড বালু রাখে সেখান থেকে আমি ৩ টাকা ৫০ পয়সা দিয়ে কিনে নিয়ে আসি।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম যাকারিয়া বলেন, নদী থেকে বালু উত্তলোন কিংবা ড্রেজার মেশিন বসানোর ক্ষমতা আমার নেই, বিক্রি তো দূরের কথা। যা করেছে ইউএনও করেছে। ইতিপূর্বে সেখানে ড্রেজার বসানো হয়েছিলো যা আমি বন্ধও করেছিলাম। ইউএনও রাণীশংকৈল রামরাই দীঘীর নিজ কাজের জন্য ১৫০-২০০ গাড়ি বালু নিয়ে গেছেন যেটা এলাকাবাসীর মুখে শুনেছি।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা মুঠোফোনে জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি অনন্ত দুঃখজনক। তবে ইউএনও বলেছেন সে বালু কিনে নিয়েছে। তিনি যদি ড্রেজারের মাধ্যমে নদী থেকে বালু তোলে থাকে তাহলে সেটি বে-আইনি জেলা নির্বাহি প্রকৌশলী কে দায়িত্ব দিয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে চোরাইকৃত ও ঝরে পড়া শাল গাছ জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন। আর এসব শালগাছ স’মিলে ফারাই করার দৃৃশ্য দেখে জিজ্ঞাসা করা হয় স’মিলের শ্রমিকদের। তারা জানায় ইউএনও অফিসের বিকাশ এবং ড্রাইভার রফিক ভ্যান যোগে কাঠগুলি নিয়ে এসেছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল