বগুড়ায় টানা দুই দিনে দুটি হত্যাকাণ্ডে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, বাড়ছে জনমনে অস্বস্তি। চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংদের দৌরাত্ম্য দমন করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার ও তদন্তের অগ্রগতি দাবি করলেও হত্যাকাণ্ড থামছে না।
সর্বশেষ রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে শহরের রংপুর সড়কের দত্তবাড়ি এলাকায় শতাব্দী ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার ইকবাল হোসেন (২৪) খুন হন। ক্যাশ কাউন্টারের ভেতর থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ইকবাল সিরাজগঞ্জ সদরের পিপুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে কাটনারপাড়ায় বসবাস করছিলেন।
ফিলিং স্টেশনের কর্মীরা জানান, ইকবাল ও সহকর্মী রতন রাতে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সকালে কর্মীরা এসে ইকবালের মরদেহ পান। ঘটনার পর থেকে রতন পলাতক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মুহাম্মাদ বলেন, “রতনের ভূমিকা সন্দেহজনক। তাকে আটক করা গেলে হত্যার রহস্য উন্মোচন সহজ হবে।” এ ঘটনায় পিবিআই ও সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে।
এর আগে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের তেলিপুকুর এলাকায় পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শাকিল খন্দকার (৪০) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আহত হন তার ভাগ্নে তৌফিক ইসলাম। নিহত শাকিল সদর উপজেলার ছিলিমপুরের বাকিবুল্লাহ খন্দকারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালু ব্যবসা ও আধিপত্য নিয়ে শাকিলের সঙ্গে শামিম ও পলাশ নামের দুজনের দ্বন্দ্ব চলছিল। ঘটনার রাতে শাকিলকে ডেকে নেওয়ার পর তারা সহযোগীদের নিয়ে হামলা চালায়। পরদিন সকালে একটি ধানক্ষেত থেকে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয়। শাকিলের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা চলমান ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টানা খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ বলছেন, বগুড়ায় নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে গেছে। পরিবার নিয়ে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে। পুলিশের নিয়ন্ত্রণে খুন থামছে না, জননিরাপত্তা নেই বললেই চলে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল