মাঠের চারদিকে চিকন দড়ির সঙ্গে রঙিণ কাগজ লাগিয়ে ঘেরা। তার চারিদিকে ভিড় করে আছেন নানা বয়সি শতশত নারী-পুরুষ দর্শক। তাদের মাঝে দুই দলে বিভিক্ত হয়ে ১০ জন ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করছেন। এক দল ঠেকাচ্ছেন। অপরদল ঝুলাঝুলি করে প্রতিপক্ষকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এসব দেখে আনন্দিত দর্শকরা করতালি দিয়ে খেলোয়ারদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
কুষ্টিয়ায় কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বুধবার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে এ দশ্য দেখা যায়।
সেখানে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গাদন খেলার আয়োজন করা হয়। হারানো ঐতিহ্যকে যুব সমাজের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এমন খেলার আয়োজন করে দুধকুমড়া যুব সংঘ। খেলায় দুই - শূণ্য গাদনে বিবাহিত দলকে পরাজিত করে বিজয়ী লাভ করেন অবিবাহিত দল। খেলা শেষে বিজয়ীদের হতে পুরস্কার তুলে দেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।
এ বিষয়ে গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ নজরুল ইসলাম বলেন, ২০ বছর আগেও এই মাঠে গাদন, হাডুডু, ফুটবলসহ নানান খেলা হতো। আমি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় হায়ারে গাদন খেলেছি। আর এখন সেসব খেলা নেই।
কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, এখনকার ছেলেপেলে মাঠে আসলেও খেলাধূলা করেনা। মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকে। মাঠে খেলাধূলা করলে শরীর মন ভাল থাকে।
ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, হারোনা এবং ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা আবার ফিরে আনতে হবে। সেজন্য সরকারি ও সামাজিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। অন্তত ২০ বছর পরে আবার গাদন খেলা দেখলাম। ভালই লাগছে।
খেলার আয়োজক বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজের জ্যেষ্ঠা সহসভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, হারানো ঐতিহ্যকে যুব সমাজের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বিবাহিত বনাম অবিবাহিত দলের গাদন খেলার আয়োজন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের আয়োজন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, গাদন গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলা। নানাবিদ কারণে ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম