পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে চীন তার অবস্থান সুসংহত করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশটির বাজারে বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি তেলের গাড়ির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চীনের বাজারে বিক্রি হওয়া মোট গাড়ির ৫১ শতাংশই ছিল নতুন জ্বালানির গাড়ি। ২০২১ সালে যা ছিল মাত্র ৭ শতাংশ।
এই প্রবণতা আগস্ট মাসেও অব্যাহত ছিল। এদিকে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র চীনের গাড়ি বাজারে তাদের প্রভাব কমাতে শুল্ক বাড়াচ্ছে। এটা চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি ২০২৩ সালের জুলাইয়ের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮ লাখ ৭৮ হাজারে পৌঁছেছে। এই বৃদ্ধি পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে তাদের নিজস্ব বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে চীনের বাজারে ১ কোটি ১০ লাখ বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে চীনের অগ্রগতি মূলত প্রণোদনা, করছাড় এবং অবকাঠামোগত বিনিয়োগের ফলে সম্ভব হয়েছে। চীনে তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়িগুলো তাদের যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রতিযোগীদের তুলনায় দামে সস্তা ও গুণগত মানে উৎকৃষ্ট হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে, যেখানে চীন স্থানীয় উৎপাদন ও সরবরাহ চেইন গড়ে তুলছে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের উত্থান ঠেকাতে শুল্ক বৃদ্ধি করছে। তবুও চীন বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে তার নেতৃত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো চীনের বিরুদ্ধে ভূরাজনৈতিক কৌশল হিসেবে শুল্ক আরোপ করছে, যা তাদের নিজেদের পরিবেশ সংরক্ষণের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের এই উদ্ভাবনী শক্তি বৈশ্বিক বাজারে তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল