শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পাগলা ঘোড়ার লাগাম টানতে হবে

নূরে আলম সিদ্দিকী

পাগলা ঘোড়ার লাগাম টানতে হবে

এটা আশ্চর্যান্বিত হলেও সত্য এবং এটিই বাস্তব যে বাংলাদেশে জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে বাস্তবধর্মী ও সৃজনশীল কোনো পরিস্থিতি নেই। এ বিষয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বিরোধী দলগুলোর যে গণমুখী ও সৃজনশীল প্রতিবাদী ভূমিকা থাকা বাঞ্ছনীয় ছিল তার আজ বড় অভাব। সেই মানসিকতার আকাল চলছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। পাকিস্তানের ২৩ বছরে আমরা- তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসী বাঙালিরা শুধু শোষণ-বঞ্চনার শিকারই ছিলাম না, আমাদের আত্মসচেতনতার অস্তিত্বকেই বিকলাঙ্গ করার ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হয়েছিল। অস্বীকার করা যাবে না, পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক ও প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রের এ উদগ্র উন্মত্ততায় বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক ক্রীড়নক ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের অভিলাষে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছিল। তাদের স্বার্থের চন্ডাল হিসেবে তারা বাঙালি জাতীয়তাবাদের অস্তিত্বকে দগ্ধীভূত করে ভস্মীভূত করতে চেয়েছিল। এর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব সামনে রেখে- তাঁর চিরায়ত জাগ্রত মানসিকতা সামনে নিয়ে এ দেশের সংগ্রামী ছাত্রসমাজ অকুতোভয়ে ও নিরলস সাধনায় শুধু একটি সফল প্রতিবাদই গড়ে তোলেনি, বরং সূক্ষ্ম, সুচারু ও দূরদর্শী রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনার অনুভূতিকে প্রতীতি ও প্রত্যয়ে, বিশ্বাস ও আদর্শে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছিল।

সেই রাজনৈতিক সত্যাগ্রহের ফলশ্রুতি আমাদের স্বাধীনতা। সারা বিশ্ব এবং বিশ্বের ইতিহাস বিনম্র শ্রদ্ধায় বিশ্বাস করে বাঙালি বীরের জাতি। তারা প্রত্যয়ের শক্তিতে পশ্চিম পাকিস্তানের হিংস্র পাশবিক সামরিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক শক্তিকে পরাভূত করেছে। একটি অসম যুদ্ধে হিংস্র সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে বাঙালি তার প্রত্যয়কে নিমিত্ত বানিয়ে উদ্গত, উদ্যত, উদ্ধত চিত্তে পাকিস্তানিদের সব দম্ভ চূর্ণ-বিচূর্ণ করেছে- বাঙালির সোনার তরীকে সাফল্যের সৈকতে নোঙর করাতে পেরেছে। কিন্তু ঐতিহাসিকের মনন ও মননশীলতা নিয়ে আজকের রাজনীতিকে যদি কেউ বিশ্লেষণ করতে যান, তাহলে তার মনে এ ধারণা বদ্ধমূল হতে বাধ্য, রাজনীতির পথিক যেন আজ পথ হারিয়েছে। তাদের গতি আজ শ্লথ, মন্থর, উদ্দেশ্যহীন, জনস্বার্থ-বিবর্জিত, সম্পূর্ণ এলোমেলো ও বিপর্যস্ত। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ সৃজনশীলতা ও আদর্শের আকাল পড়েছে বলেই রাজনৈতিক অঙ্গনের চর্চা জনস্বার্থসম্পৃক্ত বিষয়সমূহের ওপর হয় না। নিতান্ত তুচ্ছ, অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত ইস্যুগুলো আজ প্রায়শই রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ যেন ‘নেই কাজ তো খই ভাজ’-এর মতো একটা অগোছালো বিশৃঙ্খল এবং জনস্বার্থ-বিবর্জিত লক্ষ্যহীন পথচলা। বিরোধী দল আজ রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই অকার্যকর। রাজনীতিতে তাদের দৃশ্যমান ভূমিকা আজ একান্তই বিরল। পাকিস্তান আমলে বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ যে দৃপ্ত পদক্ষেপে অর্থবহ রাজনীতির সৃষ্টি করেছে, তা যেন আজ অন্ধকার অমানিশায় হারিয়ে গেছে। জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট রাজনীতি নেই বলেই, আজকে ননইস্যুকে ইস্যু হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিবাদহীন, বিরোধিতা-বিবর্জিত যে রাজনৈতিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সরকার এ পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করে আজ ভয়ংকর ও ভয়ানক একনায়কত্বের দিকে অতি দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে অকুতোভয়ে আন্দোলন তৈরি করা সংগঠন আওয়ামী লীগও আজ করাল গ্রাসে নিমজ্জিত। গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থায় গণসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দল সরকার পরিচালনা করে। বিরোধী দলও ছায়া মন্ত্রিসভা গঠন করে তার নিখুঁত ও গঠনমূলক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সরকারের বিষয়ভিত্তিক সুষ্ঠু সমালোচনা করে ইস্যুভিত্তিক বিকল্প পরামর্শ তুলে ধরে। যেটিকে জনগণ স্বভাবতই ধরে নেয় যে, বিরোধী দল ক্ষমতায় এলে তার ওই পরামর্শভিত্তিক কর্মসূচিকে বাস্তবায়ন করবে। বিরোধী দলের এই সৃজনশীল নির্ভীক ও সাহসী মননশীলতা জনগণকে শুধু আশার আলোই দেখায় না, বরং জনগণের কাছে বিরোধী দলের প্রতিশ্রুতিকেও প্রতিভাত করে।

এই নিরিখেই পাকিস্তানের ২৩ বছর জনগণের ভালোবাসার আবিরমাখা সংগঠন আওয়ামী লীগ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমণ করে জনগণের হৃদয়ের বিস্তীর্ণ বেলাভূমিতে আসন পেতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ কোনো স্বৈরশাসকের ঔরসে বা ক্যান্টনমেন্টের গর্ভে অথবা স্বার্থসিদ্ধির আঁতুড়ঘরে জন্মলাভ করেনি। বরং এর জন্ম হয়েছে গণতন্ত্রকে অর্জন করা ও তাকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিশ্রুতির অগ্নিস্নাত প্রত্যয় থেকে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তখনকার তরুণ দীপ্তপ্রাণ টাঙ্গাইলের শামসুল হক, তারুণ্যের প্রতীক শেখ মুজিবসহ একগুচ্ছ প্রত্যয়দৃপ্ত তরুণ নেতৃত্বকে নিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা করেন। চিন্তা ও চেতনায় সাবলীল ও প্রত্যয়দীপ্ত, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমণের মধ্য দিয়ে দুটি উজ্জীবিত সত্তাকে বেছে নিতে সক্ষম হন। তার একটি কলম (তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া), অন্যটি হলো মাঠ (শেখ মুজিবুর রহমান)। শহীদ সোহরাওয়ার্দী এই কলম ও মাঠের সমন্বয় ঘটিয়ে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে একটি বিস্ময়কর সম্ভাবনার সৃষ্টি করেন। কলম ও মাঠ আপন প্রতিভায় বিকশিত হয়ে বাংলার অদম্য জনতার জাগ্রত হৃদয়ের গভীরে আসন পেতে নেয়। বঙ্গবন্ধু যখন বাংলার মুক্তির উদগ্র আকাক্সক্ষায় তাঁর স্বাপ্নিক কর্মসূচি ছয় দফা প্রণয়ন করেন, তখন আওয়ামী লীগ অনেকটা দোদুল্যমান থাকলেও ছাত্রলীগ নিষ্কলুষ মানসিকতায় ছয় দফাকে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে লুফে নেয়। শিক্ষাঙ্গনের নানাবিধ কর্মসূচিকে ছাপিয়ে ছয় দফাই ছাত্রলীগের মূল রাজনৈতিক কর্মসূচিতে রূপান্তরিত হয়। অতীত ইতিহাসের চর্বিতচর্বণ না করেও সুস্পষ্ট করে বলা যায়, বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রণেতা, স্থপতি ও মহানায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর ছাত্রলীগ ছিল ছয় দফার সফলতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিনির্মাণের নিখুঁত ও সৃজনশীল কারিগর।

দীর্ঘ সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে বাঙালি যে স্বাধীনতা অর্জন করে, সেই স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করছি আমরা। এই ৫০ বছরের পথপরিক্রমণে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা সন্তোষজনক বলেই সর্বস্তরের অভিমত। এটিকে সর্বান্তঃকরণে স্বীকার করেও বলতে হয়, জাতিগতভাবে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আমরা পিছিয়ে গেছি। গণতন্ত্রের প্রজ্বলিত প্রতিশ্রুতি নিয়ে বাংলার নির্মল পূর্বদিগন্তে যে সূর্যটি উদিত হয়েছিল, তা অনেকটাই মেঘে ঢাকা পড়ার উপক্রম হয়েছে। দেশে গণতান্ত্রিক চর্চার রাজনৈতিক সংগঠনগুলো আজ যেন আলো ছড়াতে পারছে না। সবকিছুই বিপর্যস্ত এবং শুধু নীরব, নিথর, নিস্তব্ধই নয়, কিছু কুটিল রাজনৈতিক অপসংস্কৃতিরও চর্চা হচ্ছে। আজকে বিস্ময়করভাবে জিয়ার কবরস্থানে জিয়ার লাশ আছে কি না- এ প্রশ্নের অবতারণা হচ্ছে। প্রশ্নটির অবতারণা করেছেন শেখ হাসিনা। আর সেখান থেকেই অনভিপ্রেত বিতর্কের শুরু। এ দেশের রাজনীতিসচেতন মহলের জিজ্ঞাসা- ৪০ বছর পরে এ বিতর্কের অবতারণা আমাদের রাজনৈতিক দৈন্যকেই কি তুলে ধরে না? বিএনপি আজ নিথর, নিস্তব্ধ, মৃতপ্রায় একটি সংগঠন। কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না, দেশের সব অঙ্গনে থরে-বিথরে তাদের অগণিত সমর্থক রয়েছে। মোদ্দাকথা, আওয়ামী লীগ-বিরোধী জনগোষ্ঠী বিএনপিকে সমর্থন করে। যেহেতু বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ও কর্মকান্ড নেই, বিগত নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে যখন প্রশ্ন রয়ে গেছে, তখন দৃশ্যত বিএনপিকে নির্জীব বলেই মনে হয়। রাজনীতির এ অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার উক্তি সংযত, পরিণত, দূরদর্শী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা তাঁর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে। তা না করে তিনি কেন বিএনপির হাতে ইস্যু তুলে দেন, এটি অনেকেরই বোধগম্য নয়। আমি রাজনীতিতে সরাসরি সক্রিয় না থাকলেও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি সত্তা। আমার অতীত স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা একটি প্রজ্বলিত গৌরব। আমি আওয়ামী লীগের গঠনমূলক সমালোচনা করি কিন্তু তার বিরোধী নই। প্রতিনিয়ত আশায় বুক বেঁধে থাকি, আওয়ামী লীগ কর্তৃত্ববাদের প্রভাব থেকে বেরিয়ে এসে গণতান্ত্রিক সূর্যস্নাত পূর্ণ মৌলিক অধিকার-সমন্বিত গণতান্ত্রিক চর্চায় মুখরিত হয়ে দেশ ও সমাজ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মন্ত্র ছিল- ব্যক্তির চাইতে দল বড়, আর দলের চাইতে দেশ বড়। তাঁর একান্ত অনুসারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবও এ চেতনায় উজ্জীবিত ও সূর্যস্নাত ছিলেন। ভ্রান্ত বাম রাজনীতির কুটিল চক্র বঙ্গবন্ধুকে কখনো কখনো বিভ্রান্ত করেছে। এমনকি বাকশাল গঠনে প্ররোচিতও করেছে। ১৫ আগস্টের নির্মম নৃশংস হত্যাকান্ডের পর বাকশালের অভ্যন্তরে গেড়ে বসা বাম শক্তিগুলো কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল! হিমাচলের মতো বিশাল ব্যক্তিত্ব ২৬ জন দুরাচারের বুলেটের আঘাতে শেষ হয়ে গেলেন, অথচ তাঁর হত্যাকান্ডে জড়িত তস্করদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক প্রতিরোধই গড়ে উঠল না!

১৯৭১ সালে আমাদের হাতে সংগঠনের নেতৃত্ব ছিল, তাই ১ মার্চ ইয়াহিয়া খানের সংসদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের ঘোষণার প্রতিবাদে এই বাংলাকে আমরা প্রতিবাদমুখর করে তুলতে পেরেছিলাম। মাতৃভূমি বাংলাকে এমনভাবে প্রজ্বলিত করতে পেরেছিলাম, হিংস্র ও পৈশাচিক পাকিস্তানি বাহিনীর সব দম্ভ বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা ভস্মীভূত করে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতের ৪৬ বছর পার হয়েছে। অসম্পূর্ণ হলেও তাঁর হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতি উজ্জীবিত। তাই তাঁর রক্তের উত্তরসূরি হিসেবে শেখ হাসিনাকে সুচারু ও দক্ষ নাবিকের ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। বিলুপ্তপ্রায় গুরুত্বহীন ইস্যুগুলোকে আর পুনরুজ্জীবিত করা যাবে না। এটি সময়ের দাবি। এই সহজ সরল কথাটি শেখ হাসিনা যত স্বচ্ছন্দে গ্রহণ করতে পারবেন, ততটাই জাতির জন্য কল্যাণকর হবে।

জরুরি ভিত্তিতে আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্য এবং দুর্নীতি, টেন্ডারবাজিসহ সব অনাচারের লাগাম টেনে ধরতে হবে। আজকে বাংলাদেশে ব্যুরোক্রেসির প্রাধান্য অনেকটা দৌরাত্ম্যে রূপ নিয়েছে। দেশে সংসদীয় ধরনের সরকার এবং সমুজ্জ্বল সংসদও বিরাজমান। তবু আমলারা কেমন করে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে এমনভাবে কুক্ষিগত করতে পারলেন, ভাবলে অবাক লাগে। দেশের আমলারা শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না। তারা এতটাই বেপরোয়া, দেশে যে একটি সার্বভৌম সংসদ ও নির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছেন- আমলাদের আচার-আচরণ দেখে তা মনেই হয় না। আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যের কথা সংসদে তুলে ধরে প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু সেই প্রতিবাদ ব্যর্থতার বেলাভূমিতে গুমরে কেঁদেছে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মী সংসদ সদস্য, নেতা, উপনেতা সবাই আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্যে তিলে তিলে দগ্ধীভূত হচ্ছেন। সত্যি বলতে কি, সমগ্র দেশই আজ আমলাতন্ত্রের শৃঙ্খলে আবদ্ধ। জানি না কবে কখন কে এ শৃঙ্খলভাঙার অকুতোভয় দৃপ্ত মানসিকতা দেখাতে সক্ষম হবেন। কবে সংসদ তার সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ণ রেখে স্বচ্ছন্দে পথ চলতে পারবে, কবে সংসদ সদস্যরা মাথা উঁচু করে সত্যের জয়ধ্বনি করতে পারবেন, কবে তারা চাটুকারিতার গভীর অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন, কবে সৃজনশীল রাজনীতির দীপ্ত স্লোগানে রাজপথ মুখরিত হবে? একনায়কতন্ত্রের পক্ষে মোসাহেবি নয়, বরং গণতন্ত্রের সৃজনশীল চর্চায় সরকার ও বিরোধী দল নিবেদিত হবে- সেটিই জাতির কাছে বড় প্রশ্ন। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় সমগ্র জাতির সঙ্গে আজ আমিও উদগ্রীব।

লেখক : স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা।

সর্বশেষ খবর