রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অ্যান্টিবায়োটিক

যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ হোক

অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কার ছিল চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক অনন্য সাফল্য। লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে এটি ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের অযৌক্তিক ও যথেচ্ছ ব্যবহারে জীবন রক্ষাকারী এ ওষুধটি মানবদেহে তার কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এটি এখন এক বিশ্বজনীন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশসহ যেসব দেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ কেনা যায় সেসব দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে ঝুঁকির মধ্যে আছে হাজার হাজার মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা মহামারির মতো বিপজ্জনক। দেশের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের অগ্রগতি এই জীবন রক্ষাকারী ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহারে মন্থর হয়ে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়লে সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধব্যবস্থা থাকে না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে সেবন করলে এবং চিকিৎসকের দেওয়া অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পন্ন না করলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। দেশের ফার্মেসিগুলোয় যারা কাজ করেন তাদের অনেকেরই অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে ধারণা কম। আট বিভাগের ৪২৭ ফার্মেসির ওপর জরিপ করে দেখা গেছে, ৬৭ শতাংশ কর্মী অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে জানেন না। মানুষ কিনতে চাইলেই তারা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দেন। যথেচ্ছ ব্যবহার কমাতে ও সহজে অ্যান্টিবায়োটিক চেনাতে ওষুধের মোড়কে লাল রং ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ঠেকাতে আইন করছে সরকার। প্রস্তাবিত আইনটিতে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স পরবর্তী মহামারি হিসেবে দেখা দেবে। অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হতে থাকলে মানুষের চিকিৎসায় কোনো অ্যান্টিবায়োটিক হাতে থাকবে না। নতুন কোনো অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠবে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। চিকিৎসক যে কদিন সেবন করতে বলবেন তা-ও সম্পন্ন করতে হবে। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলাও জরুরি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর