শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

কিডনি প্রতিস্থাপন

কুসংস্কার ত্যাগ জরুরি

বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ কিডনি রোগে ভুগছে। কিডনি সংক্রান্ত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। অর্থাৎ দেশের মোট জনসংখ্যার নয় ভাগের এক ভাগ মানুষ কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল হয় প্রতি বছর। যাদের কিডনি বিকল হয় তাদের সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হয়। কিডনি প্রতিস্থাপন করা গেলে সুস্থভাবে জীবনধারণ করা সম্ভব হলেও এ ক্ষেত্রে সমস্যা দুটি। প্রথমত, পেতে হবে কিডনিদাতা। দ্বিতীয়ত, কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ হয় বিপুল অর্থ। বিদেশে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে খরচ হয় ৩৫ লাখ টাকা। দেশে এক-তৃতীয়াংশ খরচে ১২ লাখ টাকায় তা সম্ভব। কিন্তু এ টাকা জোগাড় করার সাধ্য দেশের খুবই অল্প সংখ্যক মানুষেরই আছে। ফলে যাদের কিডনি বিকল হয়ে গেছে তাদের জীবন হাতে রেখে ডায়ালাইসিসের কষ্ট এবং সে খরচের দুশ্চিন্তায় সময় কাটাতে হয়। বাংলাদেশ রেনাল ফাউন্ডেশনের তথ্যানুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে ৮৫ কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ২৪ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সিকেডি ও বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে সফলতার সঙ্গে কিডনি প্রতিস্থাপনের কার্যক্রম চালু আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়ালাইসিস করালে কিডনির মূল ফাংশন কাজ করে। সব ফাংশন করাতে ট্রান্সপ্লান্টের বিকল্প নেই। ট্রান্সপ্লান্টের জন্য বড় অন্তরায় হলো দেশে এ বিষয়ে প্রচার নেই। দ্বিতীয়ত, কিডনি দাতা পাওয়া দুষ্কর। নৈতিকতার দিক থেকে কিডনি বেচাকেনা কোনো দেশেই গ্রহণ যোগ্য নয়। উন্নত বিশ্বেও এটা ভলান্টারিভাবে হয়। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করতে গেলে প্রথম দরকার কিডনির সহজলভ্যতা। কিডনি না পাওয়া গেলে ট্রান্সপ্লান্ট করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। কিন্তু বিদেশে কোনো ডোনার নিয়ে গেলে তারা অত বেশি নৈতিকতা দেখে না। তারা ডোনার ও অর্থ পেলে ট্রান্সপ্লান্ট করে দেয়। সম্প্রতি দেশে মরণোত্তর কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছে। এটাকে ইতিবাচকভাবে প্রচার করে সচেতনতা তৈরি হলে কিডনি রোগীরা লাভবান হবেন। এ জন্য কুসংস্কার ত্যাগ করার মনোভাব জাগ্রত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর