বাংলা লোকসংগীতের সম্রাট আবদুল আলীমের ছোট মেয়ে নূরজাহান আলীম। ছোটবেলাতেই তিনি বাবাকে হারান। বাবার কোনো স্মৃতিই মনে নেই তার। বাবার গান-গল্প শুনেই নূরজাহানের বেড়ে ওঠা। প্রতিনিয়তই চারপাশে তিনি বাবাকে অনুভব করেছেন। গান ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে আজ তার ইন্টারভিউ
এবার বাংলাদেশ ফোক উৎসবে আপনারা তিন ভাই-বোন একসঙ্গে গান পরিবেশন করলেন। কেমন লেগেছে?
এটি আসলেই আমাদের জন্য একটি সম্মানের বিষয় ছিল। এর আগে আমরা বাবার জম্ম কিংবা মৃত্যুবার্ষিকীতে একসঙ্গে গান পরিবেশন করেছি। কিন্তু এমন একটি ফোক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করতে পেরে ভালো লেগেছে খুব। যদিও তারা আমাদের যে সময় দিয়েছে তাতে আমরা বাবার গানগুলো তেমন ভালো করে পরিবেশনের সময় পাইনি। তবুও চেষ্টা করেছি।
আপনার বাবার গানগুলো নিয়ে কি কিছু করছেন?
বাবার গাওয়া প্রতিটি গানই অসাধারণ। খুব সাবধানে গানগুলো গাইতে চাই। সেভাবে নিজেকে তৈরি করার জন্যই নিয়মিত চর্চা করে যাচ্ছি। ‘ট্রিবিউট টু আব্দুল আলীম’ শিরোনামের একটি অ্যালবাম করার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমি। এখানে বাবার কালজয়ী গানগুলো রাখার চিন্তা আছে। ইচ্ছা আছে বাবার গানগুলো সারা দেশে ফেরি করে বেড়াব।
আপনার প্রথম অ্যালবাম থেকে একটি গানের মিউজিক ভিডিও তৈরি করেছিলেন। ওটার কী খবর?
আমার প্রথম অ্যালবামটির নাম ‘মাঝি’। এটি প্রকাশ হয়েছিল বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে। অ্যালবামে সাতটি মৌলিক লোকগান ছিল। ওখান থেকে ‘যে আমার মনের পাখি’ শিরোনামের গানটির মিউজিক ভিডিও করা হয়েছিল। শিগগিরই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ভিডিওটির প্রচার শুরু হবে। এ ছাড়া নিজের আরও একটি মৌলিক গানের অ্যালবাম করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বর্তমানে অনেক শিল্পী আবদুল আলীমের গান গাইছেন। তারা কেমন করছেন?
এটা অবশ্যই একটি ভালো দিক। তা না হলে প্রজম্ম থেকে প্রজম্মে আমার বাবার গান কী করে পৌঁছাবে? আবার কষ্ট লাগে যখন দেখি বাবার গানগুলোর সঙ্গে সুর-তাল-লয় এবং কথার কোনো মিল নেই। এ জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিছু একটা করার, যেখানে গায়করা আবিষ্কার করবেন সঠিক আবদুল আলীমকে। তার গানগুলো গাইবেন নির্ভুলভাবে। সে জন্য ‘আবদুল আলীম ফাউন্ডেশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করছি আমরা। চেষ্টা করছি তার গানগুলো বাঁচিয়ে রাখার।
আপনার গানের হাতেখড়ি কার হাতে?
আমার জীবনের পথচলা এবং গান সব কিছুর মূলে বাবা; যদিও বাবাকে দেখিনি। কিন্তু তিনি কেমন করে গাইতেন, কী পছন্দ করতেন এসব আমার ভাইবোনদের কাছ থেকে শুনেই বড় হয়েছি। আমার বড় ভাই জহির আলীমের হাত ধরেই গানের জগতে আমার প্রবেশ। তা ছাড়া পরিবারের সবার কাছ থেকেই কমবেশি শিখেছি। পরিবারে সবাই গান চর্চা করেন। তবে গানের চেয়ে নাচের প্রতিই আমার বেশি ঝোঁক ছিল।
নাচটা ছাড়লেন কেন?
বাবার গাওয়া গানগুলো শুনেই গানের প্রতি বেশি অনুরাগ জন্মেছে।