ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা এবং তেহরানে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ডের পর পরিস্থিতি চরম উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ইরান স্পষ্ট ভাষায় প্রতিশোধের অঙ্গীকার করে জানিয়েছে, এই সংঘাতের শেষটা ইরানের হাতেই লেখা হবে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরান তাদের দিকে ১০০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে, যা ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে প্রতিহত করেছে। একই সময়ে ইরাক ও জর্ডানের আকাশসীমা দিয়েও শত শত ইরানি ড্রোন পার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েল কর্তৃক সংঘটিত এই হামলাকে ইরান তাদের দেশের উপর সবচেয়ে গুরুতর ও বৃহৎ আক্রমণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি কঠোর শাস্তির হুমকি দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। ইরান সামরিক ও কূটনৈতিক উভয় পথেই এর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র এই হামলায় তাদের সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে তেহরান দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু এই হামলার বিষয়ে অবগতই ছিল না, বরং পরোক্ষভাবে এর অনুমোদনও দিয়েছিল। ইরানের এই সন্দেহের কারণ হলো ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিবৃতি, যারা এই হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে 'সম্পূর্ণ সমন্বিত' বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর মার্কিন সামরিক সরঞ্জামের উপর পূর্ণ নির্ভরশীলতাও ইরানের এই ধারণাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
ইরানি সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনে একটি কড়া বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল কোনো আন্তর্জাতিক নিয়ম বা আইন মেনে চলে না এবং মাতালের মতো প্রকাশ্যে ও নির্লজ্জভাবে সন্ত্রাসবাদে লিপ্ত। ইরান আরও সতর্ক করেছে, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করা মানে সিংহের লেজ নিয়ে খেলা।
গুরুত্বপূর্ণভাবে, ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে যে এই হামলার পর তারা পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে: "বিশ্ব এখন ইরানের সমৃদ্ধিকরণ, পারমাণবিক প্রযুক্তি এবং ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির অধিকারের উপর জোর দেওয়াকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল