ব্যান্ড দল সোলসের অন্যতম সদস্য ও জনপ্রিয় গায়ক-অভিনেতা পার্থ বড়ুয়া। অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। সিনেমা, নাটক এবং ওটিটিতেও অভিনয় করে যাচ্ছেন। এদিকে সম্প্রতি ফাখরুল আরেফিন খানের ‘নীল জোছনা’ সিনেমাটি অভিনয় করছেন। তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল
নতুন এক সিনেমায় অভিনয় করছেন...
এটা ফাখরুল আরেফিন খানের একটি সিনেমা। নাম ‘নীল জোছনা’। এটি আমার অভিনীত তৃতীয় সিনেমা। সরকারি অনুদানের ‘নীল জোছনা’ সিনেমাটি নির্মাণ করা হচ্ছে মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজি-বিষয়ক উপন্যাস ‘নীল জোছনার জীবন’ অবলম্বনে।
শুটিং কি শেষ?
কিছু অংশের কাজ বাকি রয়েছে। বিভিন্ন লোকেশনে শুটিং হয়েছে। আশা রাখছি, ভালো একটি সিনেমা হবে।
আপনাকে ডা. তরফদার চরিত্রে দেখা যাবে। এই সিনেমায় যুক্ত হওয়ার নেপথ্যের কারণ কী?
আমার চরিত্রটি পছন্দ হয়েছিল। অন্যদিকে এটির চিত্রনাট্য ভালো লেগেছে। আমি যে ধরনের চরিত্র করছি, এ ধরনের চরিত্রে আমাকে এর আগে কেউ কখনো দেখেননি। আর ফাখরুল আরেফিন খানের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। গল্প আর চরিত্র পছন্দ হয়েছে বলেই প্রথমবারের মতো আরেফিনের সিনেমায় অভিনয় করছি।
মৌলিক গান নিয়ে অডিও ভিজ্যুয়াল মিউজিক্যাল প্রজেক্ট এদেশে কম হচ্ছে বলে মনে হয়?
আমি নিজেও কাজ করি। অনেক কাজ করেছি। ব্যান্ড দলে কাজ করেছি। কিন্তু মৌলিক গান নিয়ে কাজ করা আমারও খুবই কম হয়েছে। তবে, হ্যাঁ বেশি বেশি হওয়া দরকার।
আপনার মতো গুণী শিল্পীর থেকে শ্রোতারা আর বেশি গান আশা করে...
আমরা যখন সোলসের ৫০ বছর শুরু করেছি তখন থেকে নিয়মিতই কিন্তু গান বের করছি। আমরা অনেক গান ছেড়েছি। এর মধ্যে আরও ছাড়ব। আমাদের প্ল্যান ছিল ৫০ বছরে ৫০টি গান ছাড়ব। কিছু পুরনো গান থাকবে তবে সেটা শতকরা ২০ ভাগ। ৮০ ভাগই নতুন গান ছাড়ার প্ল্যান আছে। আমরা নিয়মিত গান রেকর্ডিংও করেছি। গান করছি, তবে এখন তো মানুষ অনেক বিজি। প্রচুর ইউটিউব চ্যানেল, প্রচুর টেলিভিশন। তো মানুষের প্রচুর অপশন। আগে একটা প্ল্যাটফরমে গান ছাড়ত। এরপর যখন টেপ, সিডি ছিল, তখন মানুষ একটা জায়গাতে ফোকাস হয়। এখন তো নেটদুনিয়ায় প্রতিদিন অজস্র গান বের হচ্ছে। তো ওইখানে টিকে থাকাটা অনেক ডিফিকাল্ট।
এ দেশে মিউজিক প্ল্যাটফর্মগুলো কতখানি সম্ভাবনার?
দেখুন রিয়েলিটি শো বা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের যে প্ল্যাটফরমের কাজ হয় সেগুলো মূলত তাদের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্যই হয়। মিউজিকটা সেখানে একটা কনটেন্ট মাত্র। সেখানে যারা মিউজিশিয়ান কাজ করে তারা অনেক আবদ্ধে থেকে কাজ করে। আজকাল তো ভিজ্যুয়ালেও অনেক ব্যাপার। কিন্তু সবকিছুর পরও দিনশেষে ব্র্যান্ডিংটাই মূল। এটাকে ব্যবসা বলা যেতে পারে। তো ওইখানটায় খুব কম প্রডাকশনই কিন্তু মৌলিক গান নিয়ে কাজ করে। আর যারা প্রডাকশনগুলোতে মৌলিক গান নিয়ে কাজ করতে চায় তাদের নিয়ে মূল সমস্যা হলো ওরা গানের পুরোটাই নিতে চায়। পুরো রাইটস নিয়ে যেতে চায়।
উৎসবভিত্তিক গানের এখনো অভাব। এটা কি আমাদের দীনতা?
দীনতা তো কিছুটা চলছেই। আমাদের নিয়েই তো ইন্ডাস্ট্রি। যাই চলছে তারও দায়ভার কিন্তু আমাদেরই। আমাদের নিজেদের দোষ তো অনেক রয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, আমরা ঠিক সৎভাবে কাজগুলো করতে চাই না। এটা হচ্ছে আমাদের প্রথম প্রবলেম। সৎভাবে কাজ করতে চাইলে কাজ যে করা যায় না তাও ঠিক নয়। এখন মিউজিশিয়ান থেকে ধান্দাবাজ লোকদের চলাফেরা ইন্ডাস্ট্রিতে খুবই বেশি। একটা ধান্দাবাজের সঙ্গে তো আমি পেরে উঠব না। আমি তো কাজ করব।
সোলস নিয়ে প্ল্যান?
সোলস নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন। সামনে আমাদের প্ল্যান আছে ইউরোপ যাব, কানাডা যাব শো করতে।
গায়ক নাকি অভিনেতা, কোনটা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের?
দেখুন আমি কিন্তু অভিনেতা না। একেবারেই শখের বশে করি। অভিনয়ের জায়গাটা আমার ভালোবাসার জায়গা। ভালো ভালো কিছু ডিরেক্টরের কাজ করেছি। এ জন্য কলিগস, কো-আর্টিস্ট আমাকে অভিনয়ে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।