২১ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:৪৬

আড্ডা তো দূরের কথা, হাই-হ্যালো পর্যন্ত নাই আমার!

মাসুদ হাসান উজ্জল

আড্ডা তো দূরের কথা, হাই-হ্যালো পর্যন্ত নাই আমার!

মাসুদ হাসান উজ্জল

মিডিয়াতে কাজ করি প্রায় ১৬ বছর। ১৬ বছরে অনেকের সাথে কাজ করেছি, কারো সাথেই সম্পর্ক খারাপ হবার মত কারণ কখনো ঘটেনি। কিন্তু কোন এক বিচিত্র কারণে মাত্র ২-৪ জন ছাড়া বাংলাদেশের কোন নায়ক-নায়িকা বা গায়ক-গায়িকা এবং প্রোডিউসারের সঙ্গে যোগাযোগ বা আড্ডা তো দূরের কথা, হাই-হ্যালো পর্যন্ত নাই আমার! 

তারকা শিল্পী বলতে যাদেরকে বোঝায় তাঁদেরকে কাস্ট করার দু:সাহসও দেখাই না, আমি একেবারেই তাঁদেরকে ডিরেক্ট করার যোগ্যতা রাখি না, আবার নার্ভাসও লাগে এত বড় বড় শিল্পীদেরকে ডিরেক্ট করার কথা ভাবলে! ফলে নতুন কাজের জন্য আমি সব সময় নতুনদের সন্ধানেই থাকি। কিন্তু নতুনেরাও যদি তারকা শিল্পীদের মত ভয় দেখান, তাহলে আমার মত মামুলি একজন পরিচালকের তো কাজ করবার মত নূন্যতম জায়গাটাও আর খোলা থাকে না! 

ছাত্র জীবনে প্রতিষ্ঠান বিরোধী অবস্থান থেকে শিল্প চর্চ্চা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। এরপরে সিনেমা বানানোর লোভে কিছুদিন প্রতিষ্ঠান হজম করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কথায় আছে বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে, আমারো প্রতিষ্ঠান বেশিদিন হজম হল না। সুতরাং ভাইলোক দ্বারা পরিচালিত মিডিয়া অঙ্গনে প্রতিষ্ঠানের বাইরে থেকেই আমি আমার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু সেন্সর ছাড়পত্র ছাড়া এদেশের হলে ছবি দেখানো যায় না এবং পত্রপত্রিকায় আমার খবর ছাপা হয়, তাই নিজেকে একজন খাঁটি প্রতিষ্ঠান বিরোধী বা পরিপূর্ণ  ইনডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম মেকার বলা যায় না অবশ্য! 

এ এক কঠিন যুদ্ধ, মাঝে মাঝে ক্লান্তিকরও বটে। তবুও সম্ভবত দু-একটা শক্তিশালী কারণে আমি টিকে আছি, কাজ করছি। এক- আমার খুব গভীর এবং শক্তিশালী একটা দর্শক শ্রেণী তৈরি হয়েছে গত ১৫-১৬ বছর ধরে, দুই- কোন স্বার্থ ছাড়াই সাংবাদিক বন্ধুরা আমাকে ভালোবাসেন। দু-দিন ধরে সাংবাদিক বন্ধুদের কে খুব স্মরণ করছি, কারণ আমার প্রতি উনাদের অকুণ্ঠ সমর্থন দেখে আমি লজ্জাই পেয়ে গিয়েছি। আমার নাই কোন পিআর এজেন্সি, যেহেতু নিজের আস্তানা থেকে বের হই না -কাউকে এক কাপ চা পর্যন্ত খাওয়ানোর কোন সুযোগ হয় না, আমি খুব পয়সা ওয়ালা একজন মানুষ যে তাও না! তাহলে এতো সমর্থন, ভালোবাসা ছাড়া আর কি! 

যাইহোক এতো রকমের ব্যক্তিগত আলাপ করা কোন কাজের কথা না। এসব বলার একটাই কারণ, ভাই আমি কোন ধরণের প্রতিযোগিতাতেই নাই। তবুও পেছন থেকে ঠ্যাংটা টেনে ধরার চেষ্টা না করলেই কি নয়? বেশি কিছুতো আর চাই নাই, বেঁচে থাকতে দু-চারটে সিনেমাই বানাতে চেয়েছি, আমি কয়েকটা সিনেমা বানিয়ে ফেললে দেশ, বিশ্ব বা মহাকালের কোন ক্ষতি হবে না নিশ্চয়ই!

লেখক: নির্মাতা

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর