রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সভাপতি আলী নেওয়াম মাহমুদ খৈয়াম। সদ্য ঘোষিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি সহসাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। কিন্তু এক নেতার এক পদের বিধান চালু হওয়ায় তিনি জেলার নেতৃত্বেই থাকতে চান। সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করে কেন্দ্রের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। একই অবস্থা চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করেরও। তিনিও বিএনপি প্রধানের কাছে আবেদন করে চট্টগ্রাম মহানগরের রাজনীতিতে থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মৌখিক আবেদন করেছেন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া চট্টগ্রামের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনও। চট্টগ্রামের এই দুই নেতা কেন্দ্রের পদ থেকে অব্যাহতি নিতে চান। এ নিয়ে অস্বস্বিতে পড়েছেন বিএনপি প্রধান বেগম জিয়া। তবে বিষয়টি দেখবেন বলে তিনি এড়িয়ে গেছেন। সূত্র জানায়, আগামী ১৫ রমজানের পর যে কোনো সময় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হতে পারে। ওই সময় বেগম জিয়া সব ঠিক করেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেবেন। তবে এক নেতার এক পদের বিষয়ে এখনো কঠোর অবস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক নেতার এক পদ কার্যকর করার কথাও নেতাদের জানিয়েছেন। এ নিয়ে সম্প্রতি পদ পাওয়া নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যারা একাধিক পদে রয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই নিজের পছন্দসই পদ রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দিতে হবে। এটা চেয়ারপারসনের নির্দেশ।’ দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কমিটি শিগগিরই হতে পারে। এ নিয়ে কাজ করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।’ ঘোষিত ৪২ সদস্যের কমিটিতে যারা জেলা সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছেন, তারা সবাই জেলার পদকে হাতছাড়া করতে চান না। যুগ্ম মহাসচিব বা সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো লোভনীয় পদ পেয়েও জেলা নেতৃত্বকেও আকড়ে রাখতে চান তারা। এ নিয়ে কেউ কেউ বিএনপি প্রধানকে নানা যুক্তিও দেখিয়েছেন। তবে বিএনপি প্রধান তাদের কোনো আশ্বাস দেননি। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়া বেশ কয়েকজন জেলা নেতা বলেন, খণ্ড-বিখণ্ড বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কিংবা সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদের চেয়ে জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। জেলা হাতছাড়া হয়ে গেলে ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে। তাছাড়া নেতা-কর্মীশূন্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া অনেক জুনিয়র নেতাকে সিনিয়র পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে সহসাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে কাজ করাটাকে ‘প্রেসটিস’ ইস্যুও মনে করেন তারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রণে না থেকে একটি জেলার দায়িত্ব থাকাটাকেই শ্রেয় মনে করা হচ্ছে। এতে মাঠের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে থাকাও যাবে। পাশাপাশি মাঠের নেতা হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিও অনেকটা নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তারা। যুগ্ম মহাসচিব পদ পাওয়া এক নেতা বলেন, চেয়ারপারসন আমাদের কেন্দ্রে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আমরা এখনো দলের জেলার দায়িত্বে আছি। হুট করে জেলার দায়িত্ব ছেড়ে দিলে এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এ বিষয়টি চেয়ারপারসনকে বলা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি বিবেচনায় যদি কেন্দ্রের পাশাপাশি জেলার দায়িত্ব থাকে, তাহলেও এলাকায় নেতা-কর্মীকে একটি প্লাটফর্মে রাখা সম্ভব হবে। নইলে সরকারের নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। সূত্রমতে, বিএনপি চেয়ারপারসন এবার পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যাচ্ছেন না। তিনি এবার হজ পালন করতে পারেন। আগামী ১৫ রমজান পর্যন্ত রাজধানীতে তার ইফতার পার্টিও রয়েছে। এরপরই অনেকটা ফ্রি হবেন তিনি। এ সময় কমিটি নিয়ে কাজ করবেন। নতুন কমিটির পাশাপাশি ঘোষিত কমিটির সমস্যাগুলোও মিটিয়ে ফেলবেন। অবশ্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। নবঘোষিত কমিটি কিছুটা পুনর্গঠনও হতে পারে। একজন যুগ্ম মহাসচিব ও একজন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পরিবর্তনও হতে পারে। এ ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। ঘোষিত কমিটির কয়েকটি পদ নিয়ে তিনি আপত্তি তুলেছিলেন। এবার তারেক রহমানের মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। একাধিক পদে থাকা বিএনপির কয়েকজন নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাইকমান্ড বললেও কমিটি না করেই জেলা পর্যায়ের পদ ছেড়ে দেওয়া ঠিক হবে না। কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করে দিয়েই পদ ছাড়তে হবে। নইলে সেখানে সাংগঠনিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এতে দলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। একইভাবে অঙ্গসংগঠনগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃত্বেও এর প্রভাব পড়তে পারে। এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কয়েকজন নেতা অবহিত করেছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তিনি যুগ্ম মহাসচিব পদ রেখে বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক ও যুবদল সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়ারপারসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এখন তিনি চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। আরেক যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা কমিটি করেই তিনি জেলার দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। এ বিষয়ে বিএনপির হাইকমান্ডকে জানানো হয়েছে।
শিরোনাম
- ঢাকার ইন্দিরা রোড থেকে গাজীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
- যৌথ বাহিনীর অভিযানে সারা দেশে আটক ২৯ জন
- জয়ের পরই বাবার মৃত্যুর খবর পেলেন লঙ্কান ক্রিকেটার
- বাংলাদেশ ও চীন হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা
- বাংলাদেশকে নিয়ে শেষ চারে শ্রীলঙ্কা
- সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ ভাতা পুনর্নির্ধারণ
- রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও
- নেপালকে ৪ গোলে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ইসলামি দলগুলোর ঐক্য নিয়ে যে বার্তা দিলেন হেফাজত আমির
- সিলেটে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না : পুলিশ কমিশনার
- যে সকল ভারতীয়দের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র
- ৯১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে আফগানিস্তান
- জুলাই বিপ্লব পরবর্তীতে র্যাবের কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- সার সংকটে ঝিনাইদহের কৃষক, উৎপাদন খরচ বাড়ার শঙ্কা
- ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে : প্রেস সচিব
- লিবিয়ায় মাফিয়াদের গুলিতে নিহত মাদারীপুরের যুবক
- ট্রাম্পের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই: ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট
- ফিকি লিডারশিপ একাডেমি চালুর উদ্যোগ
- জাপানের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন তাকাইচি
- শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর
কেন্দ্রের পদে নাখোশ জেলার পদে সন্তোষ
নেতাদের নিয়ে অস্বস্তিতে খালেদা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর