শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

খালেদাহীন নির্বাচন জনগণ প্রতিহত করবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদাহীন নির্বাচন জনগণ প্রতিহত করবে

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া জাতীয় নির্বাচন জনগণ প্রতিহত করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে বাদ দিয়ে আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে এদেশে নির্বাচন হবে না। এদেশের মানুষ কোনোদিনই তা মেনে নেবে না, প্রতিহত করবে।’ অবিলম্বে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলেরও দাবি জানান মির্জা ফখরুল। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে অবস্থান কর্মসূচি চলে বেলা ১২টা পর্যন্ত। সারা দেশেও অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হয়। দুই ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে সমবেত হয়। তাদের হাতে ‘গ্যাসের দাম বাড়ল কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই,’ ‘গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এ ছাড়া ‘গণতন্ত্র এনেছি, গণতন্ত্র আনব’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘খালেদা জিয়ার মামলা, নিতে হবে তুলিয়া’, ‘তারেক রহমানের মামলা, নিতে হবে তুলিয়া’ ইত্যাদি স্লোগানও দেন নেতা-কর্মীরা। অবস্থান কর্মসূচির সময় দুই পৃষ্ঠার একটি লিফলেটও বিতরণ করা হয়, যার শিরোনাম ছিল— ‘আসুন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই’। ২০১৬ সালে ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের পর এটাই বিএনপির প্রকাশ্য প্রথম কর্মসূচি। অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমা রহমান, মীর নাসির, আবদুল আউয়াল মিন্টু, জয়নাল আবেদিন, আবদুল মান্নান, আহমেদ আজম খান, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ, নিতাই রায় চৌধুরী, কবীর মুরাদ, আতাউর রহমান ঢালী, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আজিজুল বারী হেলাল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, তাইফুল ইসলাম টিপু, শহীদুল ইসলাম বাবুল, শরীফুল আলম, রফিক শিকদার প্রমুখ নেতারা ছিলেন। অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, এম এ মালেক, আবুল কালাম আজাদ, সুলতানা আহমেদ, শায়রুল কবির খান, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান, মামুনুর রশীদ মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন সময় হয়েছে আমাদের জেগে উঠবার। এখন সময় হয়েছে আমাদের প্রতিবাদ করবার, আমাদের সোচ্চার হওয়ার। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারকে আমরা বাধ্য করব একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণের নির্বাচন দিতে, যার মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এই অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বলতে চাই, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না। গ্যাসের মূল্য কমাতে হবে। এটা সবার দাবি। এই ধরনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে গিয়ে তাদেরকে উজ্জীবিত করতে হবে, সরকারের গণতন্ত্রবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী যেসব পদক্ষেপ তার বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজ গণতন্ত্র আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দী। মানুষের ভোটাধিকার আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দী। এই সরকার নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা বলতে চাই, যদি আবার এই সরকার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো গায়ের জোরে নির্বাচনের নামে তামাশা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তাহলে জনগণ আর তা বরদাশত করবে না।’ গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরে ঘরে বসে কথা বলেছি। আজকে ঘর ছেড়ে আঙিনায় এসেছি। আমরা ইচ্ছা করলে রাজপথে গিয়ে মিছিল করতে পারি। সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, আমরা প্রস্তুত। এ যাত্রা মাফ করলাম। এর পরের থেকে অনুমতি নিয়ে নয়, ঘরে নয়, রাজপথে নামব। এই সরকারের বাধা দেওয়ার কোনো অধিকার নেই। জনগণের ভোটে যারা নির্বাচিত নয়, তাদের কোনো আদেশ-নির্দেশ মানার জন্য জনগণ প্রস্তুত নয়। জনগণ এই সরকারের কোনো আদেশ-নির্দেশ মানবে না।’

সর্বশেষ খবর