শুক্রবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কারাগারে আদালত বসানোর প্রজ্ঞাপন বাতিল না হলে আইনি ব্যবস্থা

—অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা দেওয়ার পরিবর্তে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।  তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় কারা অভ্যন্তরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, তিনি কারাগারের ভিতর যে কোনো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন। এখন কারাগারে তার বিচারের জন্য আদালত বসানোর প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। এটি বাতিল না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বকশীবাজার থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে এজলাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘বিএনপিসহ বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল, সুশীলসমাজ ও সাধারণ মানুষ গণতন্ত্র, আইনের শাসন, অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। তাই আগামী নির্বাচন থেকে খালেদা জিয়াকে দূরে রাখার অপকৌশল হিসেবে বর্তমান সরকার তার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাসহ প্রায় ৩৬টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এ ছাড়া একটি মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করে খালেদা জিয়াকে ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে।’ জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার একটি হাত ও একটি পা কোনো কাজ করে না এবং প্রায় অবশ অবস্থায় তিনি দিন পার করছেন। তিনি আরথ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত। কিছুদিন আগে তিনি জেলখানায় মাথা ঘুরে পড়ে যান। তিনি ইউনাইটেড হসপিটালে তার চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার দাবি জানালেও তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এই সভাপতি বলেন, ‘বুধবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য ছিল। আমরা খালেদা জিয়াসহ অন্য দুই আসামির আইনজীবীরা যথাসময়ে বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অস্থায়ী আদালতে উপস্থিত হই। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি যে, বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতের পরিবর্তে ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে এ মামলার শুনানির জন্য অস্থায়ী আদালত স্থাপন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা গেজেট প্রজ্ঞাপনে দেখলাম যে, আদালত স্থানান্তরের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এ মামলার বিচার কার্যক্রম চলাকালে এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। তাই নিরাপত্তার কারণে আদালত কারাগারের ভিতরে স্থানান্তর করা হয়েছে। অথচ এখানেই তার একটি মামলার রায় হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আনা নাইকো, বড়পুকুরিয়া ইত্যাদি মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে। খালেদা জিয়াকে কারাগারের ভিতরে ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে বেআইনিভাবে সাজা দেওয়ার লক্ষ্যে একটি অস্থায়ী আদালত গঠন করা হয়েছে; যাতে সাধারণ মানুষ বিচারের নামে সরকারের বেআইনি কার্যক্রম দেখতে বা বুঝতে সক্ষম না হয়।’

সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা ও গোলাম রহমান ভূঁইয়া, নিতাই রায়চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া, বদরুদ্দোজা বাদল, আমিরুল ইসলাম, গাজী কামরুল ইসলাম, এ কে এম এহসানুর রহমান প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর