শিরোনাম
রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে বক্তারা

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে নগরীর কাজীর দেউড়ি নূর আহমদ সড়কে গতকাল চট্টগ্রাম বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনের প্রতিও জনগণের কোনো আস্থা নেই। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়। অবিলম্বে এই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন ইসির অধীনে ভোটের ব্যবস্থা করুন। গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়িতে নূর আহমদ সড়কে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ২৭ শর্তে এই সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। তারপরও পুলিশের নানামুখী বাধা সত্ত্বেও সকাল থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর ঢল নামে কাজীর দেউড়িতে। দুপুরের আগেই নূর আহমদ সড়কে বিএনপির নেতা-কর্মীতে পূর্ণ হয়ে যায়। এ সময় নেতা-কর্মীরা আশপাশের এলাকার ভবনের ছাদে অবস্থান নেয়। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকতউল্লা বুলু, মো. শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল ওয়াদুদ ভুঁইয়া, চাচিং প্রু জেরী, এস এম ফজলুল হক, নূরুল আমিন, আবু সুফিয়ান প্রমুখ এতে বক্তব্য দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে বারবার গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন খালেদা জিয়া আর আওয়ামী লীগ  সেই গণতন্ত্র ধ্বংস করে স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। তারা গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়েছেন। তাকে বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার জন্য এটা একটি চূড়ান্ত ষড়যন্ত্র। বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে হবে। জনগণের দুঃসময়ে বিএনপির প্রতিটি নেতা-কর্মীকে পাশে থাকতে হবে। তাদেরকে কোনো অবস্থাতেই পিছ দেওয়া যাবে না। জনগণকে নিয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। জনগণের কাছে গিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের এই অবৈধ সরকারের শাসনে যে হারে দুর্নীতি হচ্ছে- বিশ্বের আর কোথাও তা হচ্ছে না। ছোট-বড় সব ধরনের কাজে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে নিজেদের পেট ও পকেট ভর্তি করছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পিছিয়ে নেই, তাদেরকে যারা অবৈধভাবে মদদ দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে তারাও। সবাই এখন লুটেপুটে খাচ্ছে এদেশের গরিব-দুঃখী, মেহনতি মানুষের দেওয়া রাজস্বের টাকা।  ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে যত ধরনের ষড়যন্ত্র পৃথিবীর রাজনীতির ইতিহাসে রয়েছে, তার সবগুলো করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও তাদের লালিত প্রশাসনের কর্তারা। তারপরও বিএনপির কর্মী-সমর্থক একটুও কমছে না, বরং দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে জোড়ালো আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এদেশের গণতন্ত্রের মশাল তার হাতেই তুলে দিতে হবে। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার মশা মারতে পারে না কিন্তু মানুষ মারতে পারে। এমন সরকারের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে কী হবে? এটা অবৈধ সংসদ, ভেজাল সংসদ। আমরা আর খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইব না। যারা তাঁর মুক্তির পথে বাধা দেবে, তাদের ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো হবে। মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, বিএনপিকে নিঃশেষ করা যাবে না। বিএনপি গণমানুষের দল। বিএনপি ধরনা দেওয়ার দল না। বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকেই হবে। তাঁর মুক্তিতে সামনে কঠোর কর্মসূচি আসবে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। বেগম জিয়ার মুক্তি আইনি প্রক্রিয়ায় আর সম্ভব নয়। তাই তাকে কারামুক্ত করতে এখন কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর