সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
পুলিশকে হাই কোর্ট

মিন্নির প্রতি উৎসাহী না হয়ে মূল আসামিদের দিকে নজর দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিন্নির প্রতি উৎসাহী না হয়ে মূল আসামিদের দিকে নজর দিন

বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির প্রতি অতি উৎসাহী না হয়ে মূল আসামিদের দিকে পুলিশের নজর দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছে হাই কোর্ট। গতকাল মামলাটির তদন্ত পিবিআই বা সিআইডিতে হস্তান্তরের নির্দেশনা চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করে। পরে আবেদনকারী যথাযথ ব্যক্তি নয় উল্লেখ করে আবেদনটি উপস্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে হাই কোর্ট। আদালত বলেছে, এ ধরনের আবেদন মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ করতে পারেন।

শুনানিতে হাই কোর্ট বলে, এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই মাদকের ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এরপরেও তারা পুলিশের নজরদারির মধ্যে কীভাবে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। পুলিশ সতর্ক থাকলে হয়তো রিফাতকে এভাবে প্রাণ দিতে হতো না। তাই মিন্নির প্রতি উৎসাহী না হয়ে মামলার মূল আসামিদের দিকে পুলিশের নজর দেওয়া উচিত।

শুনানিতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার উপস্থিত ছিলেন। পরে বাশার জানান, আদালত তদন্তে কোনো হস্তক্ষেপ করতে চায় না। আর যিনি আবেদন করেছেন, তিনি এই আবেদন করতে পারেন না। আইনের ব্যত্যয় ঘটলে মিন্নির পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। পরে আবেদনটি উপস্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনেই প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী রিফাত শরীফকে রামদা দিয়ে কোপাচ্ছে। রিফাত ফরাজীর ভাই রিশান ফরাজী রিফাত শরীফকে জাপটে ধরে হত্যাকান্ডে অংশ নিয়েছে। স্ত্রী মিন্নি স্বামীকে বাঁচাতে প্রাণপণে লড়াই করলেও চেষ্টা করে গেলেও তিনজন পুরুষের সামনে একা পেরে উঠতে পারছিলেন না। পরে গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। পরে মিন্নিকেও রিফাত হত্যা মামলার আসামি করে গ্রেফতার দেখানো হয়। গত ১৯ জুলাই তাকে আদালতে হাজির করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়। যদিও পুলিশি নির্যাতনের কারণেই এমন জবানবন্দি দিয়েছেন বলে আইনজীবীর কাছে জানিয়েছেন মিন্নি। তিনি এই জবানবন্দি প্রত্যাহারেরও পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর