শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

মগবাজারের বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- মো. রাসেল (২৩) ও নুরুন্নবী মন্ডল (৩৫)। গতকাল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মগবাজারে ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ১১ জনে। তাদের দুজনের শরীরই ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাসেলের শরীরে ৯০ শতাংশ দগ্ধ ও শ্বাসনালি পুড়ে গিয়েছিল। তাকে প্রথমে এইচডিইউতে রাখা হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বুধবার তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। তার শরীরে কাটাছেঁড়ার ক্ষতও ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

গতকাল ভোরে নুরুন্নবী মন্ডল নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়। তার শরীরে ৯০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এ ছাড়া তার শরীরে গ্লাসের কাটা জখমও ছিল। পাশাপাশি তার শ্বাসনালিও দগ্ধ হয়েছিল। এ ঘটনায় গতকাল সকালে জাফর আহমেদ নামে একজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটে এখনো আবু কালাম কালু নামে একজন ভর্তি রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। বিস্ফোরণে আহত ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি অপর তিনজনের অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।

মৃত রাসেলের চাচা মানারুল হক জানান, রাসেলের বাবার নাম জসিম উদ্দিন। বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর থানার বনগাঁওয়ে। মগবাজার এলাকায় থাকত। হরিপুরের একটি কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে পড়তো সে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকায় দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রাসেল বেঙ্গল মিট-এ সেল্সম্যানের চাকরি নিয়েছিল।

মৃত নুরুন্নবীর স্ত্রী পপি আক্তার জানান, তাদের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা থানার হাবাসপুরে। নুরুন্নবীর বাবার নাম ইসলাম মন্ডল। রাজধানীতে ভ্যান চালাতেন নুরুন্নবী। থাকতেন হাতিরপুল বাটা সিগন্যাল মোড়ের একটি মেসে। পপি আক্তার এক সন্তানকে নিয়ে গ্রামে থাকতেন। স্বামীর দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনার পরদিন বার্ন ইনস্টিটিউটে আসেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ওয়ারল্যাসে তিনতলা একটি ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। এতে তিনতলা ভবনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ধসে পড়ার মতো অবস্থা। হেলে পড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে পূর্ব পাশের একটি ভবনও। কাঁচ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবন। সড়কে থাকা দুটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই বিস্ফোরণে ১১ নিহতসহ দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছে। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদফতর পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া এ ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেছে। প্রথম থেকেই সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে গ্যাস বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর