রবিবার, ১২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

নেতা-কর্মীদের আন্দোলন-চাপে কারামুক্ত হয়েছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নেতা-কর্মীদের আন্দোলন-চাপে কারামুক্ত হয়েছি

শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নেতা-কর্মীদের আন্দোলন ও চাপে ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে।

গতকাল দুপুরে গণভবনে শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন ও চাপে বাধ্য হয় আমাকে মুক্তি দিতে। সে সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবাক হয় যে, ১৫ দিনে আমার মুক্তির জন্য ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। এটাই আওয়ামী লীগ। জনগণই হলো আমাদের শক্তি।

১৯৮১ সাল থেকে দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে সব সময় উজানে নাও ঠেলে চলতে হয়েছে। যতবার গ্রেফতার হয়েছি ততবারই নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে চিঠি দিয়েছি। চিঠির মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি। দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা সব সময় ঠিক থাকে। এটা বাবার সময়ও দেখেছি।

কারাবন্দি থাকার সময় দেশ নিয়ে পরিকল্পনা করার কথা জানিয়ে গত তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাব, দল কীভাবে চালাব, সেসব লিখে রেখেছিলাম। কীভাবে উন্নয়ন করব সেসব পরিকল্পনা লিখে রাখি।

অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ফেরার পর ’৮৩ সালে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নানা সময়েই গ্রেফতার হতে হয়েছে। তবে কারও কাছে কোনো দিন মাথা নত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার ও বাবার কাছ থেকে এটা শিখেছি যে, কারও কাছে বা কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন সরকারে। জনমানুষের কল্যাণ আমরা বুঝি। সেটাই করে যাচ্ছি। আজ প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। মানুষ শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে সঠিকভাবে। আমরা একটা বাজেট দিয়েছি। উন্নত দেশে জিডিপি মাইনাসে। অথচ আমরা ৫ ভাগের ওপরে রেখেছি। আন্তর্জাতিকভাবে এত বাধা, তবুও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করেছি। তারপরও কিছু মানুষ এটাকে অর্জন হিসেবে নিতে পারে না। তিনি বলেন, জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। এ স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারে না। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে যাব। যে যাই বলুক আমরা আমাদের কাজ করে যাব। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত যেন সুফল পায় সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করেছি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রথমে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ফুলেল শুভেচ্ছা জানান দলীয় সভানেত্রীকে। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম, শেখ বজলুর রহমান ও আবু আহমেদ মন্নাফীর নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সাফিয়া খাতুন ও মাহমুদা বেগমের নেতৃত্বে মহিলা আওয়ামী লীগ, সমীর চন্দ ও উম্মে কুলসুম স্মৃতির নেতৃত্বে কৃষক লীগ, শেখ ফজলে শামস পরশ ও মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় যুবলীগ, নির্মল রঞ্জন গুহ ও আফজালুর রহমান বাবুর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, নাজমা আকতার ও অপু উকিলের নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগ, আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), তাঁতী লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান।

সর্বশেষ খবর