বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

নিহত রুবেলের আট স্ত্রীর সন্ধান, মর্গে উপস্থিত পাঁচজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে নিহত আইয়ুব হোসেন রুবেলের (৫৫) আট স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সন্তানসহ পাঁচ স্ত্রী ও আরেক স্ত্রীর এক সন্তান তার মরদেহ দেখতে গতকাল সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের মর্গে হাজির হন। রুবেলকে স্বামী দাবি করে কেউ দেখান কাবিননামা, কেউ আবার প্রমাণ হিসেবে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও নিয়ে হাজির হন।

রুবেলের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তার আট স্ত্রীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তারা হলেন- টিপু আক্তার (মৃত), নারগিস (অন্য জায়গায় পরে বিয়ে হয়), রেহানা, সাহিদা, সালমা আক্তার পুতুল, তসলিমা আক্তার লতা, পুষ্পা ও আরেকজনের নাম পাওয়া যায়নি। তবে পাতা খন্দকার নামে আরেকজন স্ত্রীর খবর শুনেছেন বলে স্বজনরা জানান। তাকে রুবেল বিয়ে করেন ২০২০ সালের দিকে। নারগিসের মেয়ে নিপাও গতকাল আসেন তার বাবাকে দেখতে। জানা গেছে, রুবেলের প্রথম স্ত্রীর নাম রেহানা। তার সঙ্গে বিয়ে হয় ৩০ বছর আগে। সেই ঘরের প্রথম ছেলেসন্তান হৃদয় সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরেন। রুবেলকে স্বামী দাবি করা নারী ও তাদের স্বজনদের কেউ জানেন রুবেল বাইং হাউজের ব্যবসা করেন, কেউ জানতেন ট্রাভেল এজেন্টের ব্যবসা, কেউ জানতেন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। ১৯৯৯ সালে রুবেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দাবি করে মানিকগঞ্জের সাহিদা মরদেহ তার এলাকায় নিয়ে যেতে চান। রুবেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অনেক ছবি ও ডকুমেন্টস দেখান তিনি। তার কাছ থেকে রুবেল বিভিন্ন সময় বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়েছেন বলেও দাবি করেন। লাশ নিতে চান অন্য স্ত্রীরাও। এমন পরিস্থিতিতে জটিলতা এড়াতে শেষ পর্যন্ত লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয় রুবেলের ভাই জিয়ার কাছে। এদিকে, একাধিক স্ত্রী মর্গের সামনে উপস্থিত হওয়ায় পরবর্তীতে অর্থ-সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন স্বজনরা। নারগিসের মেয়ে নিপা বলেন, তার বাবা ও মা দুজনই অন্যত্র বিয়ে করেছেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই বঞ্চিত। মৃত্যুর খবর শুনে বাবাকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে এসেছেন। এর বাইরে আর কোনো দাবি নেই। মর্গের সামনে সালমা আক্তার পুতুল নামে একজন বলেন, ‘এক আপুর মাধ্যমে রুবেলের সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন রুবেল বলেন, তার স্ত্রী অসুস্থ, তিনি বিয়ে করতে চান। আমার হাসব্যান্ড তখন ছিল না। ডিভোর্স হয়ে গেছে। তাই রাজি হই। ২০১৪ সালে আমাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের কাজি রেজিস্ট্রি ছিল না। এক বছর-দুই বছর করতে করতে ২১ সালে এসে ফেসবুকে তার বন্ধু তালিকা থেকে জানতে পারি তার এতগুলো বউ। পরে আমি উকিলের সঙ্গে কথা বলে মামলা করেছি।’ হাসপাতালে পাশে থাকা এক নারীকে দেখিয়ে রুবেলের মেয়ে দাবি করা রত্না বলেন, ‘তিনি আমার আব্বুর বউ। আরেকজন আছে, এখন পরিচয় দিচ্ছে না। আমি আব্বুর সঙ্গে তার বাসায় গিয়েছি। তার সঙ্গে  থেকেছি।’ রত্না তার বাবার সাত স্ত্রীর কথা শুনেছেন বলে জানান।

 

সর্বশেষ খবর