মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানিতে ৫৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ ও এনইআইআর সিস্টেম চালুর উদ্যোগকে ‘বিপর্যয়মূলক সিদ্ধান্ত’ আখ্যায়িত করে গণ আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, ‘এ নীতি কার্যকর হলে দেশের কোটি মানুষ প্রযুক্তিগতভাবে পিছিয়ে পড়বে, দাম বৃদ্ধি পাবে লাগামহীনভাবে এবং পুরো মোবাইল খাত ধ্বংসের মুখে পড়বে।’ গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘এনইআইআর বাস্তবায়ন : মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এসব কথা বলেন। পাশাপাশি ডিবির হাতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির সেক্রেটারি আবু সাঈদকে মুক্তি না দেওয়া হলে গণ আন্দোলনে নামার কথা বলেছেন ব্যবসায়ীরা।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মোবাইল সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান সম্প্রতি এনইআইআর সিস্টেম কার্যকর করা এবং মোবাইল আমদানিতে ৫৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দেশের কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।’ আরিফুর রহমান বলেন, ‘মোবাইল ব্যবসায় লাভের পরিমাণ খুবই সামান্য, ১ লাখ টাকার পণ্য সর্বোচ্চ ১-২ হাজার টাকার মুনাফায় বিক্রি হয়। সেখানে ৫৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলে দাম দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ হয়ে যাবে।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের ব্যবসায়ী শাহাদাত, যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ী কবির ও আজাদ, খুলনার পল্টু, মোতালেব প্লাজার খালেদ ও এহেসান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন শেষে সংগঠনের নেতারা বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির সেক্রেটারি আবু সাঈদকে ছাড়িয়ে আনার জন্য ডিবি অফিসে যান।
সাংবাদিক মিজানকে ছেড়ে দিল ডিবি : এদিকে ‘এনইআইআর বাস্তবায়ন : মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্ব নেওয়ায় দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইনপ্রধান মিজানুর রহমান সোহেলকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রাতভর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল সকালে তাঁকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের : মধ্যরাতে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিক সোহেলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
গতকাল ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগের বিষয়টি ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থেই আমরা এনইআইআর বাস্তবায়ন করছি। অবৈধ হ্যান্ডসেটের লাগাম টানতে সংক্ষুব্ধ পক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি বৈঠকও করেছে। এত কিছুর পরও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই একটি ফেসবুক পোস্ট কেন্দ্র করে কোনো কোনো গণমাধ্যম আমার ওপর দায় চাপিয়েছে। তাদের উদ্দেশেই আমার বক্তব্য, এটা অনভিপ্রেত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজ করে। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকার অবকাশই নেই।’