শিরোনাম
শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

১১ মার্চ ময়মনসিংহ ১৮ মার্চ বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা

রফিকুল ইসলাম রনি

তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করতে জেলা ও বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে জনসভার পর এবার আগামী ১১ মার্চ ময়মনসিংহ ও ১৮ মার্চ বরিশাল বিভাগে মহাসমাবেশে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছর যশোর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন    তিনি। এ বছর রাজশাহীতে জনসভার পর এ বিভাগের আওয়ামী লীগ চাঙা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে টানা জেলা ও বিভাগীয় সমাবেশ করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই উন্নয়ন উপহার নিয়ে যাচ্ছেন। চাইছেন নৌকায় ভোট। ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগেও তিনি জনসভায় নৌকা চাইবেন বলে আশা করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এই দুই জেলা ছাড়াও আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সেখানে একটি সেনানিবাসের উদ্বোধনের পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আগে থেকেই বিভাগীয় সমাবেশ করছি। আগামী ১১ মার্চ ময়মনসিংহ ও ১৮ মার্চ বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশ করব। স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওই সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।  জানা গেছে, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর গত ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে জনসভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে উত্তরাঞ্চলের আওয়ামী লীগে। হাওয়া লেগেছে নৌকার পালে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর রাজশাহীর বিশাল জনতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন বুননেই এখন একাট্টা আওয়ামী লীগ। সাংগঠনিকভাবেও আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে হয়ে উঠেছে শক্তিশালী এবং উজ্জীবিত। রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর বিশাল জনসভা যেন জনস্রোতে রূপ নিয়েছিল। কেবল দলীয় নেতা-কর্মীরাই নন, প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে, তাঁকে একনজর দেখতে এবং তাঁর আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সারথি হতে যেন ঢল নেমেছিল সাধারণ মানুষেরও। তাই প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভা যেন জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছিল গত ২৯ জানুয়ারি। রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠের সীমানায় কেবল এ জনসভা সীমাবদ্ধ ছিল না। এ জনসভা ছড়িয়ে পড়েছিল শহরের আনাচে-কানাচেও। আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা ছিল এটি।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, স্মরণকালের জনসভা হয়েছিল রাজশাহীতে। যারা এতদিন ধরে বলছিলেন- বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জনসমর্থন হারিয়েছে। তাদের সেই তির্যক মন্তব্যের দাঁতভাঙা জবাব ছিল রাজশাহীর জনসভা। এই বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আবারও নৌকায় ভোট চেয়েছেন; আদায় করেছেন ওয়াদাও। নেতা-কর্মীরাও ছিল সুশৃঙ্খল। রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণের পর রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের আওয়ামী লীগ এখন দারুণভাবে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। জনসভায় নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর নেতায়-নেতায় দ্বন্দ্ব দূর হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন করে মাঠ গোছাতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন সবাই।

বর্তমান সরকার আমলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বদলে গেছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলার যোগাযোগব্যবস্থা। পদ্মা সেতুর পায়রা সেতু, পায়রা বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ নানামুখী উন্নয়ন গ্রহণ করার ফলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে সেগুলো উপহার হিসেবে নিয়ে আগামী ১৮ মার্চ বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরিশালের এই জনসভা সফল করতে শুরু হয়েছে কর্মযজ্ঞ। এ প্রসঙ্গে বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা বন্দর নির্মাণসহ দক্ষিণাঞ্চলে গত ১৪ বছরে যোগাযোগব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। অতীতে কোনো সরকার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য এত উন্নয়ন করেনি। সে কারণে আগামী ১৮ মার্চের বিভাগীয় সমাবেশে কৃতজ্ঞ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বরিশালে নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে আসবেন। পুরো বরিশাল নগরী হবে জনসমুদ্র।’ ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ যাবেন। তাঁর আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা অতীতের কোনো সরকার করেনি। সে কারণে ময়মনসিংহবাসী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে প্রস্তুত। জেলার সার্কিট হাউস মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বিগত সময়ে যেসব উন্নয়ন করেছেন, সেগুলো যেমন তুলে ধরবেন, তেমনি আগামীতে নৌকায় ভোট দিলে কী কী করবেন সে প্রতিশ্রুতি থাকবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে।’

সর্বশেষ খবর