বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নতুন রাষ্ট্রপতির আইনগত অযোগ্যতা নেই : সিইসি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পূর্ণ বৈধ বললেন অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুদকের কমিশনার হিসেবে এক সময় দায়িত্ব পালন করায় মো. সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হতে কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির পদ নিয়ে যে বিতর্ক সামনে আনা হচ্ছে, সেটা কাক্সিক্ষত নয়। সংবিধান, আইন, বিধিবিধান ও আদালতের রায় পর্যালোচনা করলে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হতে মো. সাহাবুদ্দিনের কোনো ধরনের ‘অযোগ্যতা নেই’। এই প্রসঙ্গে সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ এবং ১৯৯৬ সালের সাহাবুদ্দীন আহমদ বনাম আবু বকর সিদ্দিক মামলার রায়টি পড়ে শোনান সিইসি। গতকাল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্বাচনী কর্মকর্তা হাবিবুল আউয়াল এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির প্রশ্নে যদি এ ধরনের অবান্তর বিতর্ক করা হয়, সেটা অনাকাক্সিক্ষত।

এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিন, যিনি দুদকের একজন সাবেক কমিশনার। ইতোমধ্যে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে। দুদক আইনে বলা আছে, কোনো কমিশনার অবসর নেওয়ার পর প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে নিয়োগের যোগ্য হবেন না। এখন মো. সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দুদক আইনের ওই সূত্র ধরে নতুন করে আলোচনা তৈরি হয়েছে রাষ্ট্রপতি পদটি ‘লাভজনক’ কি না।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, দুদক আইনে ৯ ধারায় বলা হয়েছে যে কর্মাবসানের পর কোনো কমিশনার প্রজাতন্ত্রের লাভজনক কোনো পদে নিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। এটার আলোকে বিষয়টি বিবেচ্য। অনেকে বলতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রপতির পদটি একটি লাভজনক পদ। সিইসি বলেন, উনাকে কেউ নিয়োগ দান করেননি এবং কেউ নিয়োগ দান করতে পারেন না। উনি নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন এবং নিয়োগের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে হবে। তাকে যদি এখান থেকে নিয়োগ দান করা হতো, তাহলে সেটা অবশ্যই অবৈধ হতো।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ সাহেব যখন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখন দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এ বিষয়ে রিট মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সাহাবুদ্দীন আহমেদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পূর্ণ বৈধ। এতে কোনো অবৈধতা হয়নি।

সিইসি বলেন, রাষ্ট্রপতি পদটি অফিস অব প্রফিট হলেও এটা অফিস অব প্রফিট ইন দ্য সার্ভিস অব দ্য রিপাবলিক নয়। সেখানে বিভাজন করে দেখানো হয়েছে, কোনটি অফিস অব প্রফিট ইন দ্য সার্ভিস অব দ্য রিপাবলিক, আর কোনগুলো কনস্টিটিউশনাল পদ।

একজন সাংবাদিক এ সময় সিইসিকে বলেন, “সাংবিধানিক পদে তো আপনারাও, অবসরে যাওয়ার পর আপনাদের কি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যেতে বাধা থাকছে?” উত্তরে সিইসি বলেন, আমি নিয়োগ লাভের যোগ্য হব না। তাহলে কি নির্বাচন করতে পারবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমি মনে করি আমি নির্বাচন করতে পারব। সেই ক্ষেত্রে ওখানে যদি বলে আমি নিয়োগের অযোগ্য, তো আমি একটি যুক্তি নিতে পারি যে, আমি নিয়োগের অযোগ্য, কিন্তু নির্বাচনের অযোগ্য নই।

 

প্রশ্ন তোলা অবান্তর : অ্যাটর্নি জেনারেল

মো. সাহাবুদ্দিনের নির্বাচিত হওয়ার পর পদটি লাভজনক বলে প্রশ্ন তোলাকে অবান্তর উল্লেখ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, একদম সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রপতি বৈধ। গতকাল দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সংবিধানের ৪৮, ৬৬ ও ১৪৭ অনুচ্ছেদ মিলিয়ে পড়লে দেখা যাবে এটা কোনোভাবেই লাভজনক পদের মধ্যে পড়ে না। রাষ্ট্রপতি কেনোভাবেই সরকারের কর্মে নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি নন।

সর্বশেষ খবর