ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার চলছে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৫৩ বিশিষ্ট নাগরিক। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, অপপ্রচার চালানো গণমাধ্যমগুলো ‘ভারতের উগ্রপন্থি শাসক দল বিজেপির’ স্বার্থ রক্ষাকারী। এ অপপ্রচারের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অনাস্থা তৈরি করা, মানুষের মধ্যে
বিভাজন তৈরি করা এবং গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও জাতি পুনর্গঠনকে বাধাগ্রস্ত করা। বিবৃতিতে তারা ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভারত সরকার যখন গণহত্যাকারী, পতিত স্বৈরশাসককে নিজেদের আশ্রয়ে রেখেছে, তখন ভারতীয় ‘গদি মিডিয়া’ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ‘কল্পিত ক্র্যাকডাউনের’ গল্প প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করে চলেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। দেখা গেছে, এসব কথিত খবর হয় মিথ্যা, নয়তো বিভ্রান্তিমূলক। বিবৃতিতে ৫৩ বিশিষ্টজন আরও বলেন, মুজিববাদী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এবং ভারতের সহযোগিতায় দেশে যে স্বৈরশাসন ও লুটপাট চলে আসছিল, জুলাই গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার কবল থেকে দেশের মানুষ নিজেদের মুক্ত করেছে। স্বৈরশাসনকে পরাজিত করার পর এখন চেষ্টা করা হচ্ছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার এবং জাতি পুনর্গঠনের যাত্রা শুরুর। এ সময় অবশ্যই ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং আমাদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ভারতীয় ‘গদি মিডিয়ার’ অপপ্রচার রুখে দিতে হবে। বিবৃতিতে তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানে দেশের সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম, সামাজিক ও রাজনৈতিক মতামতের মানুষ একত্রিত হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এর ফলে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তাঁরা বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে মিথ্যা তথ্য ও অপতথ্যের উপাদানে শীর্ষ একটি দেশ হচ্ছে ভারত এবং এই দানবীয় প্রপাগান্ডাযন্ত্র এখন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়িয়ে যাচ্ছে। দেশবাসী ও গণমাধ্যমের প্রতি এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তাঁরা বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে যে যেখানেই থাকুন না কেন, সবাই বাংলাদেশবিরোধী এ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও সামাজিক-রাজনৈতিক বৈচিত্র্য বাংলাদেশের শক্তি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- শহিদুল আলম, অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানসুর, লতিফুল ইসলাম, সুমন রহমান, জিয়া হাসান, ড. মারুফ মল্লিক, অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ, কাজল শাহনেওয়াজ, ড. হাসান আশরাফ, আহমাদ মোস্তফা কামাল, সায়েমা খাতুন, অধ্যাপক স্বাধীন সেন, ড. সাইমুম পারভেজ, পাভেল পার্থ, বীথি ঘোষ, মাহবুব সুমন, ওমর তারেক চৌধুরী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, আ-আল মামুন, সুস্মিতা চক্রবর্তী, মোশরেকা অদিতি হক, আর রাজি, মাহাবুব রাহমান, তুহিন খান, মিছিল খন্দকার, ইসমাইল হোসেন, নাহিদ হাসান, গাজী তানজিয়া, কাজী জেসিন, মৃদুল মাহবুব, ফেরদৌস আরা রুমী, ড. মো. হাবিব জাকারিয়া, শাহতাব সিদ্দিক অনিক, ইমরুল হাসান, শাহনাজ মুন্নী, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, মিশায়েল আজিজ, সৈয়দ মুনতাসির রিদওয়ান, পারভেজ আলম, আরিফ রহমান, মোহাম্মদ রোমেল, কামরুল আহসান, জিয়া হাশান, আলতাফ শাহনেওয়াজ, শরত চৌধুরী, বায়েজিদ বোস্তামী, পার্থিব রাশেদ, দীপক কুমার গোস্বামী, জি এইচ হাবিব, আবুল কালাম আল আজাদ, আলমগীর স্বপন, সারোয়ার তুষার ও এহসান মাহমুদ।