বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ব্যাংক একীভূত হবেই, এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এতে আমানত নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত থাকবে। সরকার আমানতকারীদের দায়িত্ব নেবে। কবে নাগাদ কোন ব্যাংক কার সঙ্গে একীভূত হবে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। আমানতকারীদের এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। সবাই টাকা ফেরত পাবেন। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা ঘোষণা অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। একীভূতকরণের আলোচনায় থাকা পাঁচটি ব্যাংকের মধ্যে চার ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করেন গভর্নর। ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এক্সিম ব্যাংক সভায় উপস্থিত ছিল না। জানা গেছে, ব্যাংক একীভূতকরণের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরুর ধাপ হিসেবে ধারাবাহিকভাবে এই বৈঠক করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মূলত একীভূত করতে কত টাকা প্রয়োজন হতে পারে ও পদক্ষেপগুলো কী কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। টাকার চাহিদা দিয়ে শিগগিরই সরকারকে চিঠি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক অক্টোবরের মধ্যে পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করতে চায়। গত জুনে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও এমডিকে নিয়ে এক বৈঠক থেকে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বার্তা দেওয়া হয়। পাঁচটি ব্যাংক একীভূতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে সম্পদের মূল্যায়ন করিয়েছে। এই মূল্যায়নে ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৬ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৯৭ দশমিক ৮০ শতাংশ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৫৮ হাজার ১৮২ কোটি টাকা বা ৯৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ খেলাপি। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ১৩ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বা ৯৫ শতাংশ খেলাপি। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২৩ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা বা ৬২ দশমিক ৩০ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। আর এক্সিম ব্যাংকের ২৫ হাজার ১০১ কোটি টাকা বা ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। তবে এক্সিম ব্যাংক একীভূত হতে চায় না। এরই মধ্যে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে তাদের আপত্তির কথা জানানো হয়েছে।