বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ভাসমান চাষাবাদে বাড়ছে সম্ভাবনা

তানভীর আহমেদ, পিরোজপুর

ভাসমান চাষাবাদে বাড়ছে সম্ভাবনা

কৃষিনির্ভর পিরোজপুর জেলায় ভাসমান চাষাবাদে রয়েছে ব্যাপক বাণিজ্য সম্ভাবনা। তবে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন সম্মিলিতভাবে কাজ করা। শুধু কৃষকের একার পক্ষে এ চাষাবাদকে বড় ধরনের বাণিজ্যিকীকরণ করা সম্ভব নয়। কৃষি বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, ব্যাংক, জনপ্রতিনিধি ও কৃষকরা সম্মিলিতভাবে কাজ করলে এ এলাকার ভাসমান চাষ পদ্ধতিকে বাণিজ্যিক সম্ভাবনাময় খাতে পরিণত করা সম্ভব হবে। বর্তমানে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদের মাধ্যমে স্থানীয় ও আশপাশ এলাকার মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুরের নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায় ভাসমান পদ্ধতিতে উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন জাতের সবজি ও চারা। এই এলাকায় উৎপাদিত সবজি দেশের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ করছে। আর এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে বিলাঞ্চলের কয়েক হাজার চাষির। ভৌগোলিকভাবেই পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ী-দোবড়া, কলারদোয়ানিয়া ও মালিখালী এবং নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা সারা বছর ৫-৮ ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ফলে সেখানে কোনো প্রকার চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। এসব এলাকায় দুই যুগ আগে কৃষকরা সমবায় সমিতির মাধ্যমে একত্রিত হয়ে শুরু করেন ভাসমান চাষাবাদ। স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের নিজস্ব জমি খুবই কম, বেশির ভাগই বর্গা নেওয়া জমি। এলাকার প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ ভাসমান সবজি চাষের সঙ্গে জড়িত। বৈশাখ থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত এই ভাসমান সবজির চাষ চলে। চাষিরা ও তাদের পরিবারের লোকজন কাজ করেন। অনেকে আবার টাকার বিনিময় প্রতিদিন অন্যের ধাপে কাজ করেন। এ কাজের জন্য প্রতিদিন ৫০০/৬০০ টাকা দিতে হয় একজনকে। এখানে উৎপাদিত একটি চারা ৮/৯ টাকায় বিক্রি হতো। তবে করোনার সময় তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছিল। তখন তাদের চারা বিক্রি হয়নি। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তাদের সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রয়োজন।

পিরোজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি প্রকৌশলী এস এম মনিরুজ্জামান জানান, এটা অত্যন্ত লাভজনক একটা পদ্ধতি এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে এসব চাষিকে উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ, বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এ ছাড়াও আমরা বীজ, সার ও কীটনাশক দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, নাজিরপুর এলাকার ভাসমান চাষাবাদের মাধ্যমে উৎপাদিত সবজি ও চারা স্থানীয় চাহিদা মিটাচ্ছে। কয়েক হাজার চাষি এতে জড়িত। তাদের পরিবার চলে এর মাধ্যমে। কৃষকদের সহায়তা ও ঋণ দিয়ে এ খাতকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য তিনি এরই মধ্যে কিছু পরিকল্পনা করেছেন।

সর্বশেষ খবর