এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে ২০২৫ সালের মার্চ শেষে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার ২০৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং বিষয়ক ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের মার্চ শেষে এ পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৭২ লাখ টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চ এই ত্রৈমাসিকে আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিতরণকৃত রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্স দ্রুততার সঙ্গে সুবিধাভোগীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার কারণে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বিতরণে এই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রবাসী আয় পাঠালে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা প্রদানের সরকারের উদ্যোগ এ প্রবৃদ্ধির একটি ইতিবাচক ফলাফল হতে পারে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করুন’ এই প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে ব্যাংকগুলোর আর্থিক শিক্ষা প্রচারাভিযান রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘এজেন্টরা এ ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক ভূমিকা রাখছে, কারণ গ্রাহকরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছেন।’ ফলে, এজেন্ট ব্যাংকিং এখন রেমিট্যান্স বিতরণের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামীণ এলাকার এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টগুলোই সর্বাধিক রেমিট্যান্স গ্রহণকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মার্চ মাসে বিতরণকৃত মোট রেমিট্যান্সের ৯০ দশমিক ১৭ শতাংশই গেছে গ্রামীণ অ্যাকাউন্টধারীদের কাছে। অপরদিকে, মাত্র ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ বা ১৭ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা নগর এলাকায় অবস্থিত এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টধারীদের কাছে গেছে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিতরণকৃত মোট রেমিট্যান্সের ৯৫ দশমিক ৪৬ শতাংশই শীর্ষ পাঁচটি ব্যাংক পরিচালনা করেছে। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, যারা একাই ৯৬ হাজার ৪২৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা রেমিট্যান্স বিতরণ করেছে যা মোট রেমিট্যান্সের ৫৩ দশমিক ২১ শতাংশ। এরপর রয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক (২৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ), ব্যাংক এশিয়া (৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ), আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক (৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ) এবং অগ্রণী ব্যাংক (৩ দশমিক ১৭ শতাংশ)।