সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের স্মার্ট ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’ ১০ লাখ গ্রাহকের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। একই সঙ্গে চলতি বছরের জুলাই মাসে এই অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা যা দেশের ব্যাংকিং খাতে অ্যাপ-ভিত্তিক মাসিক লেনদেনের নতুন রেকর্ড। এটিকে বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন ব্র্যাক ব্যাংকের চিফ ডিজিটাল অফিসার মো. মোকাররবীন মান্নান। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘১০ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারীই প্রমাণ করে যে, ‘আস্থা’ এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এটি কেবল ব্যাংকিং কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ নয়, বরং গ্রাহকের জীবনধারা ও আর্থিক পরিকল্পনার সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে। ডিজিটাল লেনদেনে স্বাচ্ছন্দ্য এনেছে আস্থা অ্যাপ।
ডিজিটাল সেবার বিস্তার : ‘আস্থা’ অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা এনপিএসবি, বিইএফটিএন, ভিসা ডিরেক্ট ও আরটিজিএস ব্যবহার করে সহজেই ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারছেন। একই সঙ্গে কার্ডবিহীন এটিএম উত্তোলন, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, এফডিআর ও ডিপিএস খোলা কিংবা ভাঙানো এবং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে। মো. মোকাররবীন মান্নান বলেন, ‘গ্রাহক শাখায় না গিয়ে ঘরে বসেই ২৪/৭ ব্যাংকিং করতে পারছেন। এতে শাখার চাপ কমছে, খরচও কমছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো গ্রাহককে ক্ষমতায়ন করা যাচ্ছে। তিনি যখন যেভাবে চাইছেন, তখনই লেনদেন করতে পারছেন।’
লাইফস্টাইল ও অতিরিক্ত সুবিধা : শুধু আর্থিক লেনদেন নয়, ‘আস্থা’ এখন একটি পূর্ণাঙ্গ লাইফস্টাইল প্ল্যাটফর্ম। অ্যাপের মাধ্যমে বাসের টিকিট বুকিং, ই-পেপার পড়া, কনটেন্ট স্ট্রিমিং, অডিও বুক, সংগীত শোনা ও বিভিন্ন ইসলামি কনটেন্ট পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে ‘আস্থা ইসলামিক’ ফিচার।
নিরাপত্তা ও গ্রাহকবান্ধব ডিজাইন : অ্যাপকে আরও সহজে ব্যবহারযোগ্য ও নিরাপদ করার বিষয়ে কাজ চলছে। মোকাররবীন মান্নান বলেন, আমরা চাই আস্থা অ্যাপ আরও বেশি গ্রাহকবান্ধব হোক। গ্রাহকরা যেন স্বচ্ছন্দ্যে সব সেবা পান। পাশাপাশি নিরাপত্তার দিক থেকেও আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা : ‘আস্থা’ অ্যাপকে নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা এবং গ্রাহকের প্রতিটি আর্থিক ও জীবনধারার চাহিদার জন্য একক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। ব্র্যাক ব্যাংক এখন পার্সোনাল ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট ফিচার চালু করার পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে গ্রাহকের লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে তাকে ব্যক্তিগত আর্থিক পরামর্শ দেওয়া যাবে। মো. মোকাররবীন মান্নান বলেন, ডেটার মাধ্যমে একজন গ্রাহককে বুঝতে পারলে আমরা জানব তিনি কোন ধরনের পেমেন্ট করেন, কী ধরনের কেনাকাটা করেন বা কীভাবে আর্থিক পরিকল্পনা করেন। তখন আমরা গ্রাহককে সবচেয়ে ভালো পরামর্শ দিতে পারব। উন্নত দেশগুলোতে ইতোমধ্যেই এই সেবা চালু হয়েছে। শিগগিরই ‘আস্থা’ অ্যাপকেও আমরা গ্রাহকের আর্থিক পরামর্শক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব। এই ফিচারের মাধ্যমে গ্রাহকরা আগাম জানতে পারবেন পরবর্তী বিল সাইকেলে কত টাকা প্রয়োজন হবে, কোন কোন খাতে খরচ আসবে। এমনকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাসিক বিল পরিশোধের নির্দেশনা (অটোমেটেড পেমেন্ট ইনসট্রাকশন) সেট করা যাবে।