কূটনৈতিক মতপার্থক্য এক জিনিস, আর প্রতিবেশীসুলভ আচরণ আরেক জিনিস। তাই দালাই লামার অরুণাচল সফর নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে ‘ঠাণ্ডা যুদ্ধ’ চললেও এডেন উপসাগরে জলদস্যুদের হাত থেকে চীনা সেনাকে সাহায্যে এগিয়ে গেল প্রতিবেশী দেশটি। ভারতীয় নৌসেনার দুটি রণতরী, ‘আইএনএস তর্কশ’ ও ‘আইএনএস মুম্বাই’ আক্রান্ত জাহাজ থেকে নিরাপদে বের করে আনল চীনা নৌসেনাকে। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
শনিবার রাতের ঘটনা। এডেন উপসাগরে একটি পণ্যবাহী জাহাজ লুঠ করছিল জলদস্যুরা। খবর পেয়ে চীনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’-র নৌসেনা ওই জাহাজকে উদ্ধার করতে যায়। জলদস্যুদের হাতে আক্রান্ত জাহাজটি থেকে ‘ডিস্ট্রেস কল’ পেয়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে যায় ভারতীয় নৌসেনার দু’টি অত্যাধুনিক রণতরীও। সেই সময় ওই জাহাজ দু'টিও এডেন উপসাগরের কাছ দিয়েই যাচ্ছিল। সাহায্যের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারেননি ভারতীয় নৌসেনারা। চীন তাদের একটি মাল্টি-ফাংশনাল ফ্রিজেট ‘ইউলিন’কে পাঠায় সাহায্যের জন্য। শেষ পর্যন্ত ভারত ও চীন, দুই দেশের নৌসেনার যৌথ অভিযানে জলদস্যু-মুক্ত হয় আক্রান্ত পণ্যবাহী জাহাজটি। আইএনএস তর্কশ রুশদের নির্মিত একটি ফিফথ তলোয়ার ক্লাস ফ্রিজেট। আইএনএস মুম্বাই গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার যেটি তৈরি হয়েছে মুম্বাইয়ে।
ভারতীয় গণমাধ্যমটির খবর, আক্রান্ত জাহাজটির ক্যাপ্টেনের ফোন কল পেয়ে এগিয়ে যায় ভারতীয় জাহাজ দু'টি। ততক্ষণে চীনা রণতরী থেকে আক্রান্ত জাহাজে নেমে পড়েছে চীনা সেনা। সেই মুহূর্তে জলদস্যু নিধন অপারেশনে চীনা নৌসেনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে দু’টি ভারতীয় রণতরী। চীনা নৌসেনাকে ‘কমিউনিকেশন’ ও ‘এয়ার সাপোর্ট’ দেয় ভারতীয় সেনা। চীনা সেনা যখন জাহাজের ‘ডেক’-এ নেমে জলদস্যুদের তাড়া করে, সেই সময় আকাশপথে হেলিকপ্টারে করে চীনা সেনার রক্ষাকবচের দায়িত্ব পালন করে ভারতীয় সেনা।
নৌসেনা সূত্রে পাওয়া শেষ খবরে জানানো হয়েছে, পণ্যবাহী জাহাজটি এখন নিরাপদে রয়েছে। জানা গেছে, ওই অপারেশন সফল হওয়ার পর ভারত ও চীন- দুই দেশের সেনাই একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করে ধন্যবাদ জানিয়েছে। আইএনএস তর্কশ ও আইএনএস মুম্বাই- এই দুই রণতরীই এর আগে ‘অপারেশন রাহাত’-কে চূড়ান্ত সাফল্য এনে দিয়েছিল। ২০১৫ সালে ইয়েমেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করতে কেন্দ্র অপারেশন রাহাত-এর ডাক দিয়েছিল।
বিডি-প্রতিদিন/০৯ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব