চীনে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর অত্যাচার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে জাতিসংঘ, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে এই ইস্যুতে নিরব ভূমিকা রাখছে পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার মতো ইসলামিক রাষ্ট্রগুলো। এমনকি চুপ রয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কর্পোরেশন। যাতে দু'মুখো নীতি বলে ব্যাখ্যা করছেন অনেকেই।
তিন সপ্তাহ আগে জাতিসংঘ একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে চীনে এক মিলিয়ন তুর্কিভাষী মানুষ বসবাস করেন। যাঁরা উইঘুর সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত। বলপূর্বক তাদের শিনজিয়াং প্রদেশের বিশেষ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে চীনা প্রশাসন এবং সেখান তাদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে। চলছে অত্যাচার।
রিপোর্ট পেশের পরেই চীনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে মার্কিন প্রশাসন। দাবি উঠেছে অভিযুক্ত শীর্ষ চীনা কর্মকর্তাদের কালো তালিকাভুক্ত করার। এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি পৌঁছে গেছে মার্কিন স্টেট সচিব মাইক পম্পেও ও ট্রেজারি সচিব স্টিভেন মুছিনের কাছে।
চিঠি লিখেছেন সেনেটর মার্কো রুবিও ও খ্রিস স্মিথ। সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর এই আগ্রাসনের প্রতিবাদ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, মুসলিমদের উপর চীনের এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত মুখ খুলতে দেখা যায়নি কোনও সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসলামিক রাষ্ট্রকে। তাদের মধ্যে অন্যতম পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব। এমনকি তুর্কি নাগরিকদের উপর অত্যাচার চললেও, বেইজিং-এর বিরুদ্ধে মুখ বুঝে রয়েছে তুরস্ক। এমনকি কাশ্মীর বা রোহিঙ্গা ইস্যুতে মতামত দিলেও এই বিষয়ে মুখে খুলেনি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কর্পোরেশন।
ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোর এই দ্বিচারিতার কারণ বুঝতে না পারলেও তা অনুমান করতে পারছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সু-সম্পর্ক বজায় রয়েছে উল্লেখিত ইসলামির রাষ্ট্রগুলোর। আর পাকিস্তানের সব ঋতুর বন্ধু চীন।
আন্তর্জাতিক মহলে একাধিক বিষয়ে চীনের ভরসাতেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদ। ফলে এই মুহূর্তে চীনের চোখে চোখ রেখে কতটা কথা বলতে পারবে মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলো সেই বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের।
বিডি প্রতিদিন/০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮/আরাফাত