এ বছর বিশ্ব ওজন দিবস থেকে বদলে গেছে কিলোগ্রামের সংজ্ঞা। প্লাটিনাম ও ইরিডিয়ামের তৈরি একটি সিলিন্ডার আকৃতির সংকর ধাতবের ওজনকে এতোদিন এক কেজি ধরা হতো। সেটিকে প্যারিসে কাচের ঘেরাটোপে রাখা হলেও সযত্ন মোছামুছিতেও এটি থেকে কিছু পরমাণু ক্ষয়ে যাচ্ছিল।
গত বছর নভেম্বরে প্যারিসের কাছে ভার্সেই শহরে ৫০টিরও বেশি দেশের ভোটে ‘ল্য গ্র্যান্ড কে’-কে বাতিল করে মাক্স প্লাঙ্কের ধ্রুবকের ভিত্তিতে এক কিলোগ্রাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবশেষে ১৩০ বছর পর গত সোমবার (২০ মে) থেকে কার্যকর হয়েছে কিলোগ্রামের নতুন সংজ্ঞা।
বিজ্ঞানীরা এবার ভাবছেন, কিলোগ্রামের মতো সেকেন্ডকে আরো নিখুঁতভাবে পরিমাপের জন্য বদলে ফেলার কথা। এটি করা সম্ভব হলে সিজিয়াম ঘড়ির চেয়ে ১০০ গুণ বেশি নিখুঁতভাবে এক সেকেন্ডকে মাপা হবে।বর্তমানে সেকেন্ড মাপা হয় সিজিয়াম পরমাণু দিয়ে তৈরি ঘড়িতে। সিজিয়াম পরমাণু নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের আলো শুষে নিয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেই শক্তি তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ আকারে ছেড়ে দেয়। ঠিক যেমন আদর্শ অবস্থায় একটি পেন্ডুলাম নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিশেষ একটি স্থানে পৌঁছায়।
সিজিয়ামের ঘড়িতে আলোর ৯১৯,২৬,৩১,৭৭০ বার স্পন্দন বা দোলনের কালকে এক সেকেন্ড ধরা হয়। কিন্তু পরবর্তী কালে তৈরি হওয়া ‘অপটিক্যাল অ্যাটমিক ক্লক’ অনেক বেশি নিখুঁত সময় দিচ্ছে। কলোরাডোর বোল্ডারের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি’-র পদার্থবিদ অ্যান্ড্রু লাডলোরের মতে, এই ঘড়িতে কম্পাঙ্ক অনেক বেশি। ফলে ঘড়ির প্রতিটি টিক অনেক কাছাকাঠি। ফলে এই ঘড়িতে সিজিয়াম ঘড়ির চেয়ে ১০০ গুণ বেশি নিখুঁতভাবে এক সেকেন্ডকে মাপা যাচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির সব ধাপ পেরিয়ে বদলটা হয়তো ঘটবে ২০২০ সালের শেষ দিকে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল