জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলামের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তথ্য উপদেষ্টা থাকা অবস্থায় পাঁচ দিন লক করে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সূত্রগুলো জানিয়েছেন, এনআইডি তথ্য ফাঁসের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি। যদিও ওই অভিযোগের প্রমাণ না মেলায় পরে আবার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইসি। আনলক করে দেওয়া হয় নাহিদের এনআইডি।
জানা গেছে, উপদেষ্টা পদে থাকাকালীনই তার বিরুদ্ধে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এনআইডি তথ্য ফাঁস করার অভিযোগ আসে ইসির কাছে। জানা গেছে, একটি সংস্থার তৎকালীন মহাপরিচালক মৌখিকভাবে মো. নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে ‘ভ বাবা’ নামে এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করে বাইরে পাচারের অভিযোগ আনেন। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। তবে সহকারী প্রোগ্রামার আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার আগেই নাহিদের এনআইডি লক করার সুপারিশ করেন সিস্টেম অ্যানালিস্ট মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর এনআইডি লক করার নির্দেশ দেন তৎকালীন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহবুব আলম তালুকদার।
এদিকে তদন্ত কমিটি দুই দিন পর অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে উল্লেখ করা হয়, একটি সংস্থার মহাপরিচালক কর্তৃক মৌখিকভাবে অভিযোগ পাওয়া যায় যে, মো. নাহিদ ইসলাম ‘ভ বাবা’ নামক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে কাজ করে নাগরিকদের তথ্যাদি বাইরে সরবরাহ করেন।
তদন্ত চলাকালীন অনলাইনের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপ যাচাইবাছাই করে দেখা যায়, ‘ভ বাবা’ গ্রুপটি হোয়াটসঅ্যাপের কোনো গ্রুপ নয়, বরং এটি টেলিগ্রামের একটি গ্রুপ। ওই গ্রুপের অ্যাডমিন তিনি নন।
তিনি এই গ্রুপ থেকে ডেটা সংগ্রহ করে অন্য কোথাও সরবরাহ করেন-এমন অভিযোগটি সত্য নয় এবং ডেটা সরবরাহ করার বিষয়ে তার কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যেহেতু এই ভোটার কর্তৃক ডেটা সরবরাহ করার বিষয়ে কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি এবং অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, সেহেতু মো. নাহিদ ইসলামের এনআইডি আনলক করার জন্য সুপারিশ করে কমিটি।
তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নথি উত্থাপন করা হলে ২২ সেপ্টেম্বর এনআইডি মহাপরিচালক এনআইডিটি আনলক করার সিদ্ধান্ত দেন। এভাবেই পাঁচ দিনের জন্য লক থাকে সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের এনআইডি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনটিএমসি থেকে এনআইডি নম্বর পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট ভোটারের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ তোলা হয়। আর সেই এনআইডি যে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সংশ্লিষ্টরা সেটা বুঝতেই পারেননি। বরং লক করার পর বোধোদয় হয়েছে যে এটা কার এনআইডি। পরে দ্রুতই আবার সেটা আনলক করা হয়।