ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার মূল রহস্য এখনও উদঘটিত হয়নি এবং পুলিশ জনগণকে বিভ্রান্তিতে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত ‘সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়াবলী’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ও নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মাণে এ প্রশাসনকে ব্যর্থ অভিযোগ করে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিও জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, প্রায় ১৩ দিন পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের নেতৃত্বে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয় তাও ছিল অত্যন্ত অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। সেই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী শহীদ সাম্যকে হত্যা করা হয় হত্যাকারীদের হাতে থাকা একটি ছোট্ট টেজার গানকে কেন্দ্র করে। অথচ কর্তব্যরত ডাক্তারের ভাষ্যমতে শহীদ সাম্যের উরুতে ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে অত্যন্ত সুচারুভাবে তার ফিমোরাল আর্টারি নামক একটি ধমনী কেটে দেয়া হয়, যার ফলে মাত্র দুই-তিন মিনিটের মধ্যেই অত্যধিক রক্তক্ষরণে মৃত্যুমুখে পতিত হয় সে।
সাম্য হত্যাকাণ্ডেরর মূল রহস্য এখনও উদঘটিত হয়নি এবং জনগণকে বিভ্রান্তির মধ্যে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সুপরিচিত ছাত্রদল নেতাকে এমন একটি তুচ্ছ বিষয়ে আক্রমণ করে অতি পেশাদার উপায়ে হত্যা করার পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র আছে নাকি নেই, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কোনো তথ্য জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন ডিএমপি কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে এটি পরিষ্কারভাবে প্রতীয়মান হয় যে, শহীদ সাম্য হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য এখনও উদঘটিত হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও রহস্য উদঘাটনের অসত্য দাবি করে পুলিশ প্রশাসন উক্ত সংবাদ সম্মেলনে অস্পষ্ট ও ব্যাখ্যাতীত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে জনগণকে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে রেখেছেন।
উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে সাহস বলেন, নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং ন্যাক্কারজনক নানান ঘটনা ঘটে যাবার পরেও তাদের গা-ছাড়া মনোভাবের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাবিধানে তাদের অযোগ্যতারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
এ সময় ছাত্রদল সভাপতি উপাচার্য এবং প্রক্টরের অবিলম্বে পদত্যাগ, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও দ্রুততম সময়ে শহীদ সাম্য হত্যাকাণ্ডের সত্যিকার রহস্য জনসাধারণের নিকট উন্মোচন এবং বিচারকার্য যথাযথভাবে সম্পন্ন করে খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। দাবি না মানলে চলমান আন্দোলন আগামী দিনে আরও তীব্রতর হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের অন্যান্যদের মধ্যে ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ সভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন শাওন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভূঁইয়া ইমনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত