ঈদে অন্যান্য সময়ের তুলনায় যাত্রীর চাপ বেশি থাকে। থাকে বাড়তি ট্রেনেরও চাহিদা। তবে লোকোমোটিভ সংকটের কারণে এবারের ঈদ যাত্রায় হিমশিম খেতে হচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলকে। ফলে ঈদে যাত্রী পরিবহনে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিন ১১৯টি লোকোমোটিভ প্রয়োজন হলেও পরিবহন বিভাগ দিতে সক্ষম হচ্ছে মাত্র ৭৫-৮০টি। যার কারণে ঈদে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ইঞ্জিনের সংকট প্রকট। ফলে ঈদ যাত্রায় যাত্রী পরিবহনে হিমশিম খেতে হবে রেলওয়েকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের লোকোমোটিভ সংকট আছে। আমরা যদি নতুন করে ২০ থেকে ৩০টি লোকোমোটিভ জরুরিভাবে ক্রয় করতে পারি, তাহলে আপাতত সংকট কেটে যাবে। যেখানে লোকোমোটিভ সংকট সেখানে কোচ সংকটটা গৌণ। কিন্তু কোচেরও সংকট আছে, তবে তা আপাতত দৃশ্যমান হচ্ছে না। লোকোমোটিভ ও কোচ দুটিরও প্রয়োজন আছে আমাদের। এ সংকট যদি কাটানো যেত তাহলে যাত্রীসেবা আরও নির্বিঘ্নে দিতে পারতাম। এরপর আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যেন ঈদ যাত্রায় ট্রেনে যেন মানুষ নির্বিঘ্নে যাত্রা করতে পারে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন সময়সূচি অনুযায়ী পূর্বাঞ্চলে প্রতিদিন স্বাভাবিক ট্রেন পরিচালনার জন্য ১১৯টি ইঞ্জিনের প্রয়োজন। কিন্তু গড়ে ৭৫ থেকে ৮০টির বেশি ইঞ্জিন পাওয়া যাচ্ছে না। ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেনও চলবে, যার জন্য বাড়তি ইঞ্জিনের প্রয়োজন। কিন্তু আমরা ইচ্ছে করলেই ইঞ্জিন বাড়াতে বা কমাতে পারি না। মেকানিক্যাল বিভাগ থেকে যত ইঞ্জিন সরবরাহ করা হয়, তা দিয়েই আমাদের ট্রেন পরিচালনা করতে হয়। পূর্বাঞ্চলে ইঞ্জিনের সংকট প্রকট এবং আসন্ন ঈদুল আজহায় কতটি ইঞ্জিন পাওয়া যাবে তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। ঈদকে সামনে রেখে পুরোনো ইঞ্জিনগুলো মেরামত করা হয়েছে। তবে ইঞ্জিন মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত যন্ত্রাংশের ঘাটতি রয়েছে, পাশাপাশি অভাব রয়েছে দক্ষ লোকবলের।
ট্রেন চালকরা জানান, ডিজেলশপে দক্ষ লোকবলের অভাবে নতুন লোকবল দিয়ে ইঞ্জিন মেরামত করার পর অনেক সময় সেগুলো পরের দিনই আবার মেরামতের জন্য পাঠাতে হচ্ছে। ইঞ্জিন মেরামতে যে মানের যন্ত্রাংশ প্রয়োজন তারও অভাব রয়েছে এবং ডিজেলশপে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবলও নেই।
পর্যাপ্ত ইঞ্জিন পাওয়া গেলে ট্রেন পরিচালনায় কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু ইঞ্জিন সংকটের কারণে ঈদে যাত্রীদের চাপ সামলাতে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করেও হিমশিম খাচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল।