সংস্কারকাজ শেষ হতে না হতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের কার্পেটিং। সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ ঘটনা ঘটেছে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে যে কেউ হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, মানহীন ও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় সড়কের এমন অবস্থা। শুধু তা-ই নয়, গেল কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সড়কে জমে থাকা পানি অপসারণ না করেই ঢালাই দেওয়া হয়। যেজন্য এটিও একটি বড় কারণ। জানা গেছে, উপজেলার গোপালপুর পাকা সড়ক (এক্সেন হাউস) হাসিমপুর পাকা সড়ক উন্নয়নের ৭৩০ মিটার কাজটি ৫০ লাখ ৯৪ হাজার ৮৭৩ টাকা চুক্তিমূল্যে পান নওগাঁর পোরশা উপজেলার মতিউর রহমান নামে এক ঠিকাদার। পরে কাজটি কিনে নেন মান্দা উপজেলার শহিদুল ইসলাম। আর কাজটি দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আল-আমিন। স্থানীয়রা বলেন, ২৫ মে রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। শুরু থেকে ধুলোবালি ঠিকমতো পরিষ্কার করেনি। রাস্তায় বিটুমিনের আবরণ নেই। এর মাঝে বৃষ্টির মধ্যে সড়কটিতে নিম্নমানের কাজ হচ্ছিল। সব বাধা উপেক্ষা করে অফিসের লোকজনকে ম্যানেজ করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রাখেন। বৃষ্টির মাঝেই রাস্তার কাজ করা হয়েছে। এ ছাড়া চটের বস্তা দিয়ে রাস্তার পানি মুছে তারপর পিচ ঢালাই করা হয়েছে। তাহলে কীভাবে সেটা থাকবে।
মোটরসাইকেলে ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব। তিনি বলেন, হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। কতটা দুর্নীতি ও অনিয়ম হলে এমন হয়। সড়কটি সংস্কারে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে, তাই হাতের টানেই উঠে যাচ্ছে। স্থানীয় এক গৃহবধূ বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘদিন পর নির্মাণ হয়েছে কিন্তু ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের কারসাজিতে রাস্তাটিতে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। তাই রাস্তাটি ভেঙে পড়ছে। রাস্তায় কাজের সময় পিচ ঠিকমতো দেয়নি। কোনোরকম হালকাভাবে পিচ দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রাস্তার কাজে তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আল-আমিন বলেন, শেষ গাড়িতে মিক্সিং একটু সমস্যা হয়েছিল। আর বৃষ্টির মধ্যে কাজ করার জন্য ১৫ মিটারের মতো সড়কে এ রকম সমস্যা হয়েছে। নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে ঠিকাদার শহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঠিকাদারের একটু সমস্যা হয়েছে এটা শুনেছি। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছি। ঠিকাদার পুনরায় কাজটি করে দেবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।’