যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও দমনপীড়ন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখনো বিরাজ করছে। শেখ হাসিনার শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণবিক্ষোভের এক বছর পূর্ণ হলেও দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি। বুধবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, শেখ হাসিনার দমনমূলক শাসনের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নামা হাজারো মানুষের আশা এখনো অপূর্ণ। অন্তর্বর্তী সরকার যেন একটি অদলবদলের রাজনীতিতে আটকে গেছে। এখানে প্রতিশোধ প্রধান হয়ে উঠেছে, অধিকার নয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ব্যাপক গুম, নিখোঁজ ও নিপীড়নের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, সেগুলো অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। তবে শুরু হয়েছে অন্য ধারার দমন। এতে সরকারবিরোধী ভাবাপন্ন ব্যক্তিদের হয়রানির জন্য শুরু হয়েছে নির্বিচার গ্রেপ্তার। ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় পুলিশ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে। এদের অধিকাংশই বেনামি আসামি। গ্রেপ্তার করা হয় শত শত মানুষকে।
এইচআরডব্লিউ বলছে, অপরাধের জন্য দায়ীদের বিচার হওয়া জরুরি হলেও বর্তমানে যেসব মামলা হচ্ছে সেগুলোর অনেকটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অন্যদিকে শেখ হাসিনার আমলের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ খুবই সীমিত।
এইচআরডব্লিউ বলছে, মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। নিরাপরাধ আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে, বিচারপতির স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া র?্যাবসহ নির্যাতনকারী বাহিনীগুলোর সংস্কার জরুরি। সংস্থাটি বিদেশি সরকার ও জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও সুইডেনের মতো দেশগুলো যেন মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।