সমুদ্রতটে পড়ে আছে বিশাল আকারের এক তিমির নিথর দেহ। এতটা জায়গাজুড়ে পড়ে আছে যে দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, ওটা একটা তিমির দেহ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলজুড়ে এই দৃশ্য আজকাল বেশ চোখে পড়ছে, যা বেশ উদ্বেগে ফেলেছে জীববিজ্ঞানীদের।
গত এক বছরে এধরনের বিলুপ্তপ্রায় তিমির মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার লিমানটুর সৈকতে শনিবার আরও একটি ধূসর তিমির দেহ দেখতে পেয়ে গবেষণায় নেমেছেন সমুদ্রবিজ্ঞানীরাও। তাদের একাংশের মতে, খাদ্যাভাবে এমন বিশালদেহী জলজ প্রাণী মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে।
যুক্তি হিসেবে তারা তুলে ধরছেন, সমুদ্রের ধারে পড়ে থাকা মৃতদেহগুলোতে স্পষ্ট অপুষ্টির ছাপ। অনেক সময়ে মা-শাবকের নিথর দেহও দেখা যাচ্ছে একত্রে। এই ক’মাসে অন্তত ১০ শতাংশ ধূসর তিমির মৃত্যু হয়েছে বলে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে।
এখানকার মেরিন ম্যামাল সেন্টারের তরফে তিমির মৃত্যুর কারণ বুঝতে একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হয়েছে। যারা সমুদ্রের তলদেশে নেমে খুঁজবেন কারণ।
আবার আরেকদলের মতে, এ ধরনের তিমির বংশবৃদ্ধি বেশি হয়। সেক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত বংশবৃদ্ধিই তাদের মৃ্ত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে কি না, তা নিয়েও শুরু হয়েছে গবেষণা।
স্থানীয় পশুবিজ্ঞানী শন জনসনের কথায়, ‘এবছর এই অঞ্চলে আকস্মিকভাবে তিমির মৃত্যু হয়েছে। গোটা পশ্চিম উপকূল ঘিরেই এদের দেহ ছড়ানো। এটা অস্বাভাবিক লাগছে। সাধারণত বছরে খুব বেশি হলে, আমরা ১০টি তিমির দেহ দেখতে পাই।’
এর জন্য কেউ কেউ আবার বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করছে। বলা হচ্ছে, সমুদ্রতলের জলের তাপমাত্রা বাড়ছে, সেই গরমে অত বড় প্রাণীরা ছটফট করতে করতে পাড়ের দিকে চলে আসছে, আর তাতেই মৃত্যু হচ্ছে।
ধূসর তিমির মৃত্যুরহস্য হয়তো উদ্ঘাটিত হবে। কিন্তু উদ্বেগ তাতেও কিছু কমছে না। কারণ, এভাবেই বিপন্ন হয়ে পড়ছে পৃথিবীর বহু জলচর জীব, যা থেকে তাদের রক্ষা করা জীববিজ্ঞানীদের কাছে রীতিমত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম