হাতে মাত্র আর কয়েকঘণ্টা। এরপরই ভারতের আসামে প্রকাশিত হবে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা। এদিকে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ নিয়ে যাতে গুজব না ছড়ায়, তাই আসাম পুলিশের পক্ষ থেকে রাজ্যের মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
পুলিশের আশঙ্কা তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পর গুজব ছড়িয়ে কেউ কেউ সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে নজরদারি চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিতে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
শুক্রবার রাজ্য পুলিশের ডিজি কুলধর সাইকিয়া বলেন, ‘অশান্তি বা যে কোন অপ্রতীকির ঘটনা এড়াতে রাজ্যজুড়েই ১৬৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরও ৫১ কোম্পানিকে নিযুক্ত করা হবে। শান্তি বজায় রাখতে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্য জুড়ে ২৫০০ এনআরসি সেবা কেন্দ্র (এনএসকে)-এর মধ্যে প্রায় ১২০০ টিকে স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’
গুয়াহাটি সহ বেশকিছু স্পর্শকাতার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলিতেও বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। যদিও প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর কোনরকম প্রতিবাদ বরদাস্ত করা হবে না।
এদিকে অবাধ ও সুষ্ঠু তালিকা প্রকাশ নিয়ে সব পক্ষই উদ্বেগে রয়েছে। কোনও ভারতীয় নাগরিকের নাম বাদ পড়া কিংবা অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকের নাম তালিকায় না ঢুকে পড়ে সেই আশঙ্কাও রয়েছে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপিসহ বিরোধী কংগ্রেস, এআইইউডিএফ-এর মতো দলগুলির।
উল্লেখ্য সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধায়নে গত ৩০ জুলাই ভারতের আসামে প্রকাশিত হয় জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-এর চূড়ান্ত খসড়া তালিকা। এনআরসি’এর কাছে জমা পড়া আসামের ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪ আবেদনকারীর মধ্যে চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয় ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৭ জনের। তালিকা থেকে বাদ পড়ে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম। পরে অতিরিক্ত খসড়ায় বাতিল হয় আরও ১ লাখ ২ হাজার ৪৬৫ জনের নাম।
আর তার পরেই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে যথেষ্ট সোরগোল পড়ে যায়। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’এর বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি তো একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলে অভিযোগ করার পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন এর ফলে দেশে ‘রক্তগঙ্গা’ ও ‘গৃহযুদ্ধ’ শুরু হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল