ভারতের ঝাড়খণ্ডের মসনদের রাস্তা পরিষ্কার হেমন্ত সোরেনের সামনে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম), কংগ্রেস এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) জোটে সরকার গঠনের তৎপরতা তুঙ্গে। প্রাথমিকভাবে মন্ত্রিসভার রূপরেখাও তৈরি করে ফেলেছেন জোট নেতারা।
জেএমএম এবং রাঁচির রাজভবন সূত্রে খবর, হেমন্ত সোরেনের শপথ গ্রহণ হতে পারে আগামী শুক্রবার।
গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত বিজেপি আশায় ছিল, ফল হতে পারে ত্রিশঙ্কু। কিন্তু বেলা যত গড়িয়েছে, পাল্লা ঝুঁকে পড়েছে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোটের দিকে।
সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যা ৪১-এর ধারে কাছেও যেতে পারল না বিজেপি। ৮১টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৫টি আসনে জয় লাভ করল তারা, ২০১৪ সালের ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে পাওয়া আসন থেকে ১২টি আসন কম পেল এবার। সেখানে কংগ্রেস-জেএমএম-আরজেডি জোট ৪৭টি আসনে জয় পেল, গতবারের তুলনায় ২২টি আসন বেশি পেল তারা।
এই ফলের পরেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ অবশ্য রাজনৈতিক সৌজন্যের খাতিরে বিরোধীদের জয়ের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা বলেন যে জনগণের এই আদেশ মাথা পেতে নিচ্ছেন তারা।
এদিকে, এমন ফলাফলে জোটের পরিষ্কার হয়েছে সরকার গঠনের রাস্তা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ মঙ্গলবারই রাঁচিতে পরিষদীয় দলের বৈঠকে বসছেন শিবুপুত্র হেমন্ত। বৈঠকে থাকবেন ঝাড়খণ্ডের তিন বারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের বাবা শিবু সোরেনও।
জেএমএম সূত্রে খবর, সেই বৈঠকেই হেমন্তকে পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত করবেন দলের বিধায়করা। তারপর আজ অথবা আগামীকাল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি করতে পারেন হেমন্ত। শপথগ্রহণ হতে পারে ২৭ ডিসেম্বর।
মন্ত্রিসভার রূপরেখা কেমন হতে পারে, তা নিয়েও একটি ফর্মূলা তৈরি হয়েছে বলে তিন দলের জোট সূত্রে খবর। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীসহ ৬টি দফতর থাকবে জেএমএম-এর হাতে। কংগ্রেসের হাতে থাকতে পারে বিধানসভার স্পিকারসহ ৫টি দফতর। একটি দফতর দেওয়া হতে পারে লালুপ্রসাদের দল আরজেডি-কে।
উল্টো দিকে বিজেপি শিবিরে তেমন উৎসাহ নেই। হতোদ্যম রাজ্য নেতাদের অনেকেই। এমনকি, বিরোধী দলনেতা নির্বাচন নিয়েও তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি দলের অভ্যন্তরে। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে গত কালই রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা দিয়ে এসেছেন রঘুবর দাস। তিনি নিজেই হেরে গেছেন। ফলে বিরোধী দলনেতা হওয়ার দৌড়ে থাকতে পারবেন না তিনি। তাকে যিনি হারিয়েছেন, সেই নির্দল প্রার্থী সরযূ রায় বিজেপিতে ফিরতে পারেন বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। ফলে তাকে বিরোধী দলনেতা করা হতে পারে বলে বিজেপির একটি সূত্রে খবর। যদিও এ নিয়ে এখনও আলোচনা শুরু হয়নি বলেই দলের নেতাদের সূত্রে খবর মিলেছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত