এল পাসিনো আর ক্রাইস্টচার্চের দুই সন্ত্রাসী হত্যাযজ্ঞ শুরুর আগে বলেছিলেন, বিশ্বে মানুষ কম থাকাই ভালো। এক গবেষণা বলছে, মানুষ সত্যিই কমবে, একসময় অর্ধেক হয়ে যাবে জাপান আর স্পেনের জনসংখ্যা। কিন্তু মানুষ কমলে আসলে কী উপকার?
জন্মদানের ক্ষমতা কমছে
বিশ্বে বয়স্ক মানুষ বাড়ছে আর কমে যাচ্ছে উর্বরতা শক্তি, অর্থাৎ সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা। বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল ল্যান্সেটে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র বলছে, একুশ শতকের শেষ দিকে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই জনসংখ্যা কমবে।তখন জনসংখ্যাবিস্ফোরণ নিয়ে আতঙ্কের স্থান নেবে একটি প্রশ্ন- নতুন প্রজন্ম আসবে কীভাবে?
৯৭০ কোটি থেকে কমার শুরু
ইন্সটিটিউট ফর হেল্থ মেট্রিস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) গবেষণা অনুযায়ী, আগামী চার দশকের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাবে। তাই বিশ্বের জনসংখ্যা ৯৭০ কোটিতে পৌঁছে যাবে। তারপরই কমতে শুরু করবে মানুষ, একপর্যায়ে জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮৮০ কোটিতে।
স্পেন আর জাপান অর্ধেক
গবেষণাটি আরও বলছে, ৮০ বছরের মধ্যে স্পেন আর জাপানের জনসংখ্যা কমে অর্ধেক হয়ে যাবে। চীনের জনসংখ্যাও এত কমবে যে, ভারত আর নাইজেরিয়া হয়ে যাবে সবচেয়ে জনবহুল দেশ।
স্বাভাবিক ধারায় মাত্র ১২টি দেশ
সোমালিয়া, সাউথ সুদানসহ মাত্র ১২টি দেশে তখন শিশুজন্মের হার স্বাভাবিক থাকবে। বাকি সব দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়বে আশঙ্কাজনক হারে।
সবচেয়ে খারাপ আশঙ্কা
সারা বিশ্বে শিক্ষার হার বর্তমান ধারায় বাড়তে থাকলে এবং জন্মনিরোধক ঘরে ঘরে পৌঁছে গেলে ২১০০ সালে সারা বিশ্বে জনসংখ্যা ১৫০ কোটি কমে যেতে পারে।
কমলেই লাভ?
মানুষের সংখ্যা কমলে কার্বন নিঃসরণ কমবে, কমবে সারা বিশ্বের খাদ্যের ওপর চাপ। তবে সব মানুষ সমান হারে কার্বন নিঃসরণ করে না। তাই হ্যারিসবুর্গ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষক অরবিন্দ রবিকুমার মনে করেন, মানুষ কমলে জলবায়ুর কল্যাণ হবে এমন ধারণা একেবারেই কাল্পনিক।
জনসংখ্যা কমার অন্ধকার অতীত
জনসংখ্যা কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ অনেক সময় অনেক দেশেই নেয়া হয়েছে। বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যানাডায় আদিবাসী নারীদের স্টেরিলাইজ করা হয়। ১৯৭৬ সালে দাতা গোষ্ঠীর চাহিদা অনুযায়ী, একইভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছিল ভারত। তখন ৬২ লাখ মানুষকে স্টেরিলাইজ করেছিল ইন্দিরা গান্ধী সরকার। চীনেও এই প্রক্রিয়া অবলম্বনের অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ